বীর শ্রেষ্টদের অবদান

বীর শ্রেষ্টদের অবদান নিয়ে আমাদের আজকের লেখা । আশাকরি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন । আমরা আমাদের সত্যিকারের ইতিহাসে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম জেনেছি। তারা তাদের আত্মবিশ্বাসের এবং তার বীরত্বের কারনেই এই পদক্ষেপের শিকার হতে পারে ছিলেন বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ অবদানের উপরে অবস্থিতি প্রকাশিত যোদ্ধাদের জল্পনা সরবরাহ করা হয়। একত্রী বীরশ্রেষ্ঠ, বীর মনোমুগ্ধকর, বীর ছাত্র ও বীর উদযাপন। আমাদের মধ্যে পর্যায়ের উচ্চ পদক্ষেপের বিরতিবীরের ঘটনা ঘটে। সমীক্ষা করা হয় প্রায় সাত জনের এই সময়সীমা সরবরাহ করা হয়। তারা অসম সাহস এবং তার বীরত্ব দেখায়। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাইছি বাংলাদেশ আমাদের এই সাত বীরশ্রোতার নাম তাঁর আত্মবিশ্বাস কাহিনী জেনে নেই-

বীর শ্রেষ্টদের অবদান

১- ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর তিনি কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে। শহীদ হয়েছিলেন ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে। তিনি মুক্তি বাহিনীর ৭নং সেক্টরের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। মহানন্দা নদীর তীরে শত্রুর প্রতিরক্ষা ভাঙ্গার প্রচেষ্টার সময় তিনি শহীদ হয়েছিলেন। তার দুঃসাহসিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মুক্তিবাহিনী ঐ অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সাধন করে।

২- সিপাহী হামিদুর রহমান কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে শহীদ হয়েছিলেন ২৮ অক্টোবর ১৯৭১ তারিখে। পাকিস্তান বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নিল মুক্তি বাহিনীরা। কিন্তু সে কাজ সফল করা এতো সহজ ছিল না। সব শেষে হামিদুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয় গ্রেনেড হামলা করার। দুঃসাহসিক যোদ্ধা হামিদুর রহমান সাহসিকতার সাথে পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে বুকে হেঁটে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করলেন শত্রু পক্ষের ঘাটিতে। এবং দুটি গ্রেনেড সফল ভাবে পাক সেনাদের মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে। কিন্তু তার কিছু সময় পড়েই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই তিনি মেশিনগান পোস্টে গিয়ে হাতা হাতি যুদ্ধ শুরু করেন দুই জন পাকিস্তানী সৈন্যের সাথে। অপর দিকে তার সঙ্গীরা অাক্রমণ শুরু করে। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিপুল ক্ষতি সাধন করে তারা। এবং ঘাটি দখলে তারা সফল হলো। কিন্তু হামিদুর রহমান ততো সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। তার এই বীরত্বের কথা জাতি আজও শ্রদ্ধা ভরে স্বরন করে।

৩- সিপাহী মোস্তফা কামাল কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে শহীদ হয়েছিলেন ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে। মোস্তফা কামাল দরুইন গ্রাম তার দলবল সহ হানা দেয় পাকিস্তানি বাহিনীর ঘাটিতে। কিন্তু এক সময় শত্রুর পক্ষের প্রবল আক্রমণের কারনে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু প্রবল আক্রমণের মুখে পিছু হটার কোন উপায় ছিল না। এ কারনে মোস্তফা কামাল তার সঙ্গিদের সকলের প্রান বাঁচাতে নিজের জিবন বাজি রেখে তিনি একাই শত্রুদের মোকাবেলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। তার সঙ্গীদের এই সিদ্ধান্তে তীব্র বাধা সত্বেও তিনি পিছু হটেনি। তিনি একাই শুরু করে গোলা বর্ষণ। তার এই প্রবল আক্রমণের কারনে কিছুতেই সামনে অগ্রসর হতে পারছিল না পাকিস্তানি বাহিনী। তবে যে সময় শত্রু পক্ষের সেনারা তার ৭০ গজের ভিতর প্রবেশ করে এমন সময় তার গোলাবারুদ শেষ হয়ে যায়। শত্রুর গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল বাংলার অকুতোভয় সৈনিক বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল। তবে তার এই আক্রমণের কারনে পিছু ধাওয়া করার সাহস পাইনি শত্রু পক্ষ তন্মধ্যে বাকি সাথিরা নিরাপদে সরে গিয়েছিল।

Read More  Home insurance in new york

৪- ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে শহীদ হয়েছিলেন ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে। মুক্তিবাহিনী যশোর সেনানিবাস দখলের পর খুলনার মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌঘাঁটি পি.এন.এস. তিতুমীর দখলের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ‘পদ্মা’, ‘পলাশ’ এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর একটি গানবোট ‘পাভেল’। গানবোট গুলো খুলনা শিপইয়ার্ডে পৌছায় ১০ ডিসেম্বর। সময় ১২ টা এমন সময় আকাশে তিনটি ভারতীয় জঙ্গিবিমান পদ্মা, পলাশ এবং পাভেলের দিকে ছুটে আসে। সবাই আক্রমণের অনুমতি চাইলে অভিযানের সর্বাধিনায়ক ক্যাপ্টেন মনেন্দ্রনাথ ভারতীয় বিমান মনে করে বিমান কে লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করতে নির্দেশ দেয় নাই। কিন্তু আচমকা বিমান তিনটি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে এবং নিচের দিকে নেমে এসে গোলাবর্ষণ শুরু করে। ভারতীয় গানবোটে বিমান তিনটি আক্রমণ না করে পদ্মা এবং পালাশে আক্রমন করে। যার ফলে দুইটি গানবোটই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবং গানবোটের ইঞ্জিনে আগুন লেগে যায়। তবুও সে গানবোট রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। গোলার আঘাতে রুহুল আমিনের বা হাত দেহ হতে বিছিন্ন হয়ে যায়। তবে অসিম সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন যেন দমবার পাত্র নয়। তিনি মাঝ নদিতে ঝাপ দেন এবং সাতরে নদী পাড় হয়ে যান। কিন্তু নদীর পাড়েই অপেক্ষা করছিল রাজাকার নামক শকুনের দল তারা তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে লাশ নদীর পাড়ে ফেলে রেখে যায়। বেশ কয়েক দিন তার লাশ নদীর পাড়েই পড়েছিল।কেউ দাফন ও করেনি। এর পড়ে এলাকার লোকজন তার লাশ দাফন করে। তার

Read More  হাসির ধাঁধা

৫- ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে শহীদ হয়েছিলেন ২০ আগস্ট ১৯৭১ তারিখে। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের জঙ্গি বিমান দখল করবেন। এবং দখল করে মুক্তি যুদ্ধে যোগ দিতে চাইছিলেন। এ কারনে তিনি বিমান হাইজ্যাক করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তার জন্য ২০ আগস্ট ১৯৭১ তারিখ কে বেছে নেন। তিনি ছিলেন বিমানের সেফটি অফিসারের পদে। তখন রাশেদ মিনহাজ নাম একজন শিক্ষানবিশের কাছ থেকে বিমান ছিনিয়ে নিতে চান। সেদিন ছিল তার প্রশিক্ষণের দিন। যখন বিমান আকাশে উড়ে তখন সুযোগ বুঝে তিনি রাশেদ মিনহাজ কে ক্লোরোফোম দিয়ে অজ্ঞান করে বিমানের কন্ট্রোল নেন। তবে রাশেদ মিনহাজ অচেতন হওয়ার আগেই কন্ট্রোল রুমে জানিয়ে দেয় তার বিমান হাইজ্যাক করা হচ্ছে। তাই চারটি জঙ্গি বিমান তাদের পিছে ধাওয়া করে। মতিউর রহমান যখন শত্রুদের রাডার ফাকি দিয়ে ভারতের সিমান্তের কাছে পৌছে ঠিক তখন রাশেদ মিনহাজের জ্ঞান ফিরে এবং মতিউর রহমানের সাথে ধ্বস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মতিউর রহমান বিমান থেকে ছিটকে পড়ে নিচে। প্যারাসুট না থাকার কারনে তার মৃত্যু হয়। এবং কিছুদূর গিয়ে বিমানটি বিধস্ত হয় ও রাশেদ মিনহাজ ও মারা যায়। মতিউর রহমানের লাশ পাওয়া গিয়েছিল ঘটনা স্থলের থেকে আধা কিলোমিটার দূরে।

৬- ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে শহীদ হয়েছিলেন ৮ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে। পাকিস্তানি বাহিনী মুন্সি আব্দুর রউফ এবং তার সহযোদ্ধাদের ঘাটি চিন্হিত করে আক্রমণ চালায়। তাদের প্রবল আক্রমণের কারনে মুক্তি যোদ্ধাদের পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু তারা তারা যেই পিছু হটতে শুরু করে কিন্তু তাদের পিছনে হটতে দেখে পাকিস্তানি বাহিনী আরো দ্রুত এগিয়ে আসে তাদের দিকে। এমন অবস্থায় মুন্সি আব্দুর রউফ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি একাই শত্রুর মোকাবিলা করবেন। এবং সঙ্গীদের নিরাপদ ঘাটি ত্যাগ করার সুযোগ করে দিবেন। তিনি একাই গোলাবর্ষণ শুরু করেন। এবং শত্রু পক্ষের সাতটি স্পিডবোট ডুবিয়ে দেয় এবং দুটি লঞ্চ নিয়ে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিন্তু তারা পিছু হটার সময় মর্টার দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে। যার মোকাবিলা করা মুন্সি আব্দুর রউফের পক্ষে অসম্ভব। এমন সময় মর্টারের একটি গোলা এসে তার ঘাটিতে পড়ে এবং তিনি মৃত্যু বরন করেন। কিন্তু বাকি ১৫০ জন্য সৈনিক নিরাপদ দূরত্বে চলে যেতে সক্ষম হন। দুঃসাহসিক যুদ্ধে তিনি শহীদ হন।

Read More  Love at home without going out

৭- ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশ রাইফেলসে শহীদ হয়েছিলেন ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ তারিখে। মাত্র ৫ জন সৈনিক নিয়ে নুর মোহাম্মদ শত্রুর কবলে পড়ে। শত্রুপক্ষ তাদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল। শত্রুপক্ষের থেকে গুলিবর্ষণ শুরু হলে তারাও গুলিবর্ষণ শুরু করে। এক সময়ে তাদের দলে থাকা সিপাহী নান্নু মিয়া গুলিবিদ্ধ হন এবং মাটিতে লুটিয়ে পরেন। নূর মোহাম্মদ নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নেন এবং এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করে। এমন সময় পাকিস্তানি বাহিনীর মর্টারের একটি গোলা নুর মোহাম্মদের বাম কাধে লাগে। তখন তিনি তার সকল সঙ্গীদের বাচাতে শত্রুপক্ষের উপর প্রচন্ড গোলাবর্ষণ শুরু করে এবং নান্নু মিয়াকে নিয়ে বাকিদের নিরাপদে সরে যাওয়ার কথা বলেন। শত্রুপক্ষের নজর তার উপর থাকায় বাকিরা নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন। এবং তার একার আক্রমণে শত্রুদের অভাবনীয় ক্ষতি সাধন হয়। কিন্তু এরপরে আহত শরীর এবং সীমিত গোলা নিয়ে তিনি তাদের বিপুল সেনার সাথে পেড়ে উঠে নাই। তিনি মৃত্যু বরন করেন। এবং তার মৃত্যুর পড়ে শত্রুদের এতটাই ক্ষতি সাধন করেন যার কারনে রাগে তারা রাইফেলের বেয়োনেট দিয়ে চোখ দুটো উপড়ে ফেলে। এবং মাথা খুলি ভেঙে মাথার ঘিলু বের করে ফেলে। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং সমাধিস্থ করা হয়।

আমাদের মুক্তি যোদ্ধারা যুদ্ধের দক্ষতা ছাড়াই যতটা সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছে এবং তাদের যুদ্ধের দক্ষতা ও কৌশল প্রদর্শন করেছে তা সত্যিই অভাবনীয় এবং প্রসংশার যোগ্য বাঙ্গালী জাতি আজো তাদের কুর্নিশ জানায় শ্রদ্ধাভরে!

About the Author:

Habibur Rahman is an expert writer about Bangla poems, romantic stories, captions, status and quotes. He is writing about all romantic and motivational quotes, poems, captions, and status messages from the past 12 years. He has completed honors and master's degrees in literature from Dhaka University.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *