বক্তব্য কিভাবে শুরু করব ? আমাদের সকলের জীবনেই কোন না কোন সময় বক্তব্য দিতে হয়। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের অনেকেই বক্তব্য দিতে জড়তা অনুভব করে। এবং মনে করে কি বলবো না বলবো। আমার কথা কি শ্রোতা মনোযোগ দিয়ে শুনবে বা অনেক ধরনের চিন্তা আমাদের মাঝে কাজ করে। আমরা অনেক সময় বক্তব্য দিতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলি যার ফলে শ্রোতাদের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়। এ কারনেই বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম এবং এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ ফলো করা উচিত আসুন জানি কোন অনুষ্ঠানে বক্তব্য কিভাবে শুরু করব সে বিষয়ে, Read more: জীবন নিয়ে উক্তি
বক্তব্য কিভাবে শুরু করব :
আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছোট বড় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করি। এবং অনেক সময় বক্তব্য দিতে হয়। যদি আপনি সে অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হয়ে থাকেন তাহলে তো কোন কথাই নাই! অনেকের দেখা যায় বক্তব্য শুরু করতে গিয়ে হাটু কাপে এবং মাঝ পথেই থেমে যায়। আমরা যেসকল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে থাকি সেটা হতে পারে আনন্দ উৎসব বা বেদনার। অথবা রাজনৈতিক কোন সমাবেশ। তবে কোন অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুরু করতে প্রথমেই আত্ম বিশ্বাস আনতে হবে এবং জড়তা দূর করতে হবে। কারন আত্ম বিশ্বাস না থাকলে কোন ভাবেই একটি সুন্দর বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবেন না। আত্ম বিশ্বাস অর্জনের পাশাপাশি আমাদের আমাদের ভাবতে হবে কোন ধরনের অনুষ্ঠানে আপনি বক্তব্য দিচ্ছেন এবং কিভাবে উপস্থাপন করা উচিত। কারন একটি একটি আনন্দ অনুষ্ঠানে আপনার বক্তব্যে মুখে হাসি ফুটে উঠবে পক্ষান্তরে কোন দুঃখের অনুষ্ঠানে বা বিদায় অনুষ্ঠানে হাসি মুখে বক্তব্য দেন তাহলে আপনাকে পরতে হতে পারে বিপত্তিতে। এ কারনেই ঠিক করুন অনুষ্ঠানের ধরন এবং সেই মোতাবেক আপনার মুড!
এর পরে বক্তব্যে কি বলবেন, এটি যদি পূর্বেই ঠিক হয়ে থাকে আপনি উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে তাহলে পূর্বেই অনুশীলন করতে পারেন বা লিখে নিতে পারেন। বা হুট করে হলেও আপনি বক্তব্য প্রদানের পূর্বে বেশ খানিকটা সময় পাবেন। এর ভিতর ভেবে নিতে পারবেন কি বলবেন বা কোন বিষয়ে ফোকাস করবেন। এবং সময় পেলে অনুশীলন করতে পারেন। বা আপনার বক্তব্য দেওয়ার কোন প্লান না থাকলেও একটি বক্তব্য দেওয়ার যে কমন বিষয় গুলো থাকে তা অনুশীলন করতে পারেন।
এবার বক্তব্য শুরু করার সময়েই আপনি প্রধান কথা শুরু না করে এমন কিছু কথা বলুন যাতে শ্রোতা দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। এবং কথা বলার সময় দৃঢ়তার সাথে কথা বলুন। এবং নজর সব সময় শ্রোতাদের দিকে রাখুন। তবে এই কথা গুলো হবে খুবই সীমিত সময়ের জন্য। বেশি দীর্ঘায়িত করবেন না। এতে শ্রোতার বিরক্তি ধরে যেতে পারে।
এর পরে মূল কথা বলা শুরু করেন৷ এবং কথা গুলো সুন্দর ভাষায় দৃঢ়তার সাথে বলুন। কখনোই মুখস্থ বলার মত গড়গড় করে বলে যাবেন না। এতে আপনার বক্তব্যটি যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক সেটি হবে শ্রোতাদের কাছে বোরিং। এবং কোন গুরুত্বপূর্ণ কথার মাঝে স্বল্প বিরতি নিতে পারেন। যা অমনোযোগী শ্রোতাদের ও আকৃষ্ট করবে। কারন হটাৎ করে আপনার বক্তব্য বন্ধ হয়ে গেলে। অমনোযোগী শ্রোতারা বা আপনার দিকে না তাকানো শ্রোতারাও আপনার দিকে তাকাবে এবং ভাববে বলা বন্ধ হলো কেন। এটা দেখতে তারা মাথা তুলে তাকাবে। ৫-৬ সেকেন্ড বিরতি দিয়ে আবার বলা শুরু করুন।
শ্রোতারা যেসকল বিষয় পছন্দ করে না সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখুন। যেসকল বিষয় শ্রোতারা পছন্দ করে না তা হলো,
★ বক্তব্যে মাত্রাতিরিক্ত উদাহার দিবেন না।
★ সব সময় পজেটিভ কথা বলুন। কারন নেগেটিভ কথা বক্তব্যে শ্রোতা কখনোই পছন্দ করে না।
★ বচন ভঙ্গির এবং অঙ্গভঙ্গির দিকে খেয়াল রাখুন। অসামঞ্জস্য পূর্ন বচন ভঙ্গি বা অঙ্গ ভঙ্গি আপনাকে অপ্রস্তুত বা শ্রোতাদের অমনোযোগী করে দিতে পারে।
★ অযুহাত এবং অভিযোগ পরিহার করুন।
★ কাওকে ছোট বা হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার বক্তব্যে শ্রোতা মনোযোগ হারাবে।
★ নিজেকে অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ বোঝানোর চেষ্টা করবেন না। বরং আপনার বক্তব্যের মধ্যেই নিজের ব্যাক্তিত্য তুলে ধরুন!
এবং আপনার বক্তব্যটি দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত হোক শেষ করার পূর্ব কিছু মঙ্গল সূচক এবং ভাল কথা বলুন। কোন প্রতিষ্ঠানের হলে তার উন্নতি কমনা করুন বা কোন ব্যাক্তির হলে তার সফলতা এবং সমৃদ্ধি কামনা করুন। সর্বোপরি শ্রোতাদের মনে আশা জাগানো কথা বলুন। এবং আপনার বক্তব্যটি শেষ করুন।