দুটি সেরা কাল্পনিক গল্প

এখানে আমরা এমন দুটি কাল্পনিক গল্প দিয়েছি । যেগুলো খুবই চমৎকার । এই গল্প গুলোর একটি হলো সহমর্মিতা আর ভালোবাসার গল্প আরেকটি হলো সাহসিকতার গল্প । আপনারা চাইলে এগুলো দিয়ে ভিডিও বানাতে পারেন । কারণ এই গল্প গুলো একদম ইউনিক এবং অন্যসব গল্পের মত নয় । আসুন তাহলে শুরু করি ।

কাল্পনিক গল্প

কাল্পনিক গল্প ১ঃ

একটি গ্রামে ছিলো ছোট্ট একটি মেয়ে, নাম তার লাবণী। তার বয়স মাত্র দশ বছর, কিন্তু তার মন ছিলো অনেক বড়। লাবণীর পরিবার খুবই সাধারণ, তবে তার বাবা-মা তাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে রেখেছিল। লাবণীর সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিল গ্রামের বাগানে ঘুরে বেড়ানো এবং বিভিন্ন রঙের ফুলগুলো দেখে মুগ্ধ হওয়া।

একদিন লাবণী বাগানে হেঁটে বেড়াচ্ছিল, তখন হঠাৎ তার নজরে পড়ল এক অদ্ভুত ফুল। ফুলটি ছিল আগের থেকে অনেক বড় এবং অদ্ভুত রঙের, যেন সেই ফুল কোনো জাদুর মতো জ্বলজ্বল করছিল। সে আগ্রহ নিয়ে ফুলটির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। হঠাৎ করেই, ফুলটি একটি নরম আলো ছড়িয়ে দিল, এবং সেই আলো লাবণীর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ল।

লাবণী বিস্ময়ে পিছিয়ে আসে। চোখ মেলে সে দেখতে পায়, বাগানের চারপাশে বদলে গেছে! এখন সেই জায়গাটি ছিল আরেকটি পৃথিবী। সেই পৃথিবী ছিলো এক স্বপ্নের মত সুন্দর; সেখানে আকাশ ছিল গোলাপি, মেঘগুলো নীল এবং চারপাশে উড়ে বেড়াচ্ছিল রঙিন প্রজাপতি। লাবণী বুঝতে পারল, সে হয়তো কোনো জাদুকরী জগতে এসে পড়েছে।

এই নতুন জগতে হাঁটতে হাঁটতে লাবণী এক সুন্দর প্রাসাদ দেখতে পায়। প্রাসাদটি কাঁচের মতো স্বচ্ছ এবং আলোয় ঝলমল করছিল। ভিতরে ঢুকতেই তার সামনে হাজির হলো এক রহস্যময় মানুষ, যিনি বললেন, “আমি এই জাদুকরী জগতের রক্ষক। তুমি আমার ফুলটি ছুঁয়েছো এবং তাই এই পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পেরেছো।”

Read More >>  ভুতের গল্প

লাবণী ভীত হলেও সাহস করে বলল, “আমি কি এখানে চিরকাল থাকতে পারবো?”

রক্ষক মৃদু হেসে বললেন, “এই জগতের সৌন্দর্য এবং শান্তি তুমি পাবে, তবে তোমাকে একটি শর্ত পালন করতে হবে। তোমার গ্রামের মানুষদের মাঝে ভালোবাসা এবং সাহায্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে।”

লাবণী সম্মতি জানায়। সে প্রতিজ্ঞা করে, যখনই সে নিজের জগতে ফিরে যাবে, সে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা এবং সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেবে।

এরপর রক্ষক একটি জাদুকরী ফুল লাবণীর হাতে তুলে দেন এবং বলেন, “এই ফুল তোমাকে সবসময় সাহায্য করবে, যতদিন তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা পালন করবে।”

লাবণী ধীরে ধীরে চোখ খুলে দেখে, সে আবার সেই বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু তার হাতে রক্ষকের দেওয়া ফুলটি এখনো ছিল। সে বুঝতে পারে, সবকিছু স্বপ্নের মতো হলেও, প্রতিজ্ঞাটি সত্যি।

সেই দিন থেকেই লাবণী গ্রামে ভালো কাজ করতে শুরু করল। সে যেখানেই যেত, মানুষের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিত। গ্রামের মানুষ তাকে ভালোবেসে “জাদুকন্যা” বলে ডাকতে শুরু করে। আর লাবণী জানত, যতদিন সে ভালো কাজ করবে, তার হাতে থাকা জাদুকরী ফুলটি তার পাশে থাকবে।

এভাবেই লাবণীর জীবন এক অপূর্ব সুন্দর গল্প হয়ে উঠল, যেখানে ভালোবাসা আর সহমর্মিতাই ছিল তার জাদু।

কাল্পনিক গল্প ২ঃ

একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল নদীর তীরে। সেই গ্রামের নাম ছিল “নীলপুর”। নীলপুরের মানুষজন ছিল শান্তিপ্রিয় এবং পরিশ্রমী। গ্রামের সবচেয়ে অদ্ভুত এবং রহস্যময় জিনিস ছিল একটি পুরানো কূপ। সেই কূপের নাম ছিল “ইচ্ছেপূরণের কূপ”। লোকেরা বলত, এই কূপের জল পেলে যে কোনো ইচ্ছে পূরণ হয়। কিন্তু কূপটি গ্রামের বাইরে গভীর বনের মধ্যে ছিল, আর কেউ কখনো সাহস করত না সেখানে যেতে।

Read More >>  রূপকথার গল্প

গ্রামে থাকত এক কিশোর, নাম তার ইমতিয়াজ। ইমতিয়াজ ছিল কৌতূহলী এবং সাহসী। তার ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে একদিন এমন একজন মানুষ হবে, যাকে সবাই সম্মান করবে এবং তার সাহসের জন্য তাকে ভালোবাসবে। কিন্তু তার পরিবার খুব গরিব ছিল। সে জানত, শুধুমাত্র কল্পনা করলে তার ইচ্ছে পূরণ হবে না, কিছু করতে হবে।

একদিন ইমতিয়াজ শুনল গ্রামের কিছু লোক কূপের গল্প করছে। তখন সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল, সে ইচ্ছেপূরণের কূপে যাবে এবং তার ইচ্ছে পূরণের জন্য জল নিয়ে আসবে।

পরের দিন ভোরবেলা, ইমতিয়াজ কোনো কিছু না বলে বনের দিকে রওনা হলো। বনের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে সে দেখতে পেল, পথ আরও গভীর এবং জটিল হয়ে উঠছে। চারপাশে অদ্ভুত সব আওয়াজ, ঝোপের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা প্রাণীদের চোখ। কিন্তু ইমতিয়াজ তার মনকে শক্ত রাখল, তার লক্ষ্য ছিল সেই কূপ।

অনেকক্ষণ হাঁটার পর, ইমতিয়াজ অবশেষে কূপের কাছে পৌঁছাল। কূপটি ছিল অনেক পুরানো, তার চারপাশে লতাপাতা জড়িয়ে ছিল, আর কূপের উপরে ছিল একটি রহস্যময় শিলালিপি। সেখানে লেখা ছিল, “শুধু যাদের হৃদয়ে সত্যিকারের সাহস আর শুদ্ধ ইচ্ছে আছে, তারাই এই জল পান করতে পারে।”

ইমতিয়াজ শিলালিপির কথা ভেবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। তারপর সে মনে করল, তার ইচ্ছে স্বার্থপর নয়; সে নিজেকে শক্তিশালী করতে চায় যাতে সে অন্যদের সাহায্য করতে পারে। এই ভাবনা তাকে আরও সাহসী করে তুলল। সে কূপের পাশে গিয়ে তার হাত দিয়ে জল তুলল। জলটি ছিল স্ফটিকের মতো পরিষ্কার, আর তার ঠোঁটে ছোঁয়াতেই সে অনুভব করল এক অদ্ভুত শক্তি।

হঠাৎ কূপ থেকে একটি স্বচ্ছ আলোর ঝলকানি উঠল, আর সেই আলো থেকে একটি মায়াময় কণ্ঠস্বর শোনা গেল, “ইমতিয়াজ, তোমার হৃদয় সাহসী এবং শুদ্ধ। এই কূপ তোমাকে আশীর্বাদ করেছে। তোমার ইচ্ছে পূর্ণ হবে, কিন্তু তোমাকে মনে রাখতে হবে— প্রকৃত শক্তি আসে দায়িত্ববোধ থেকে।”

Read More >>  কিভাবে প্রেম করতে হয়

ইমতিয়াজ বাড়ি ফিরল, আর তার জীবনে পরিবর্তন আসতে শুরু করল। সে আরও পরিশ্রমী এবং দায়িত্বশীল হয়ে উঠল। গ্রামের মানুষ তাকে বিশ্বাস করতে লাগল, আর ধীরে ধীরে সে সবার প্রিয় এবং সম্মানিত ব্যক্তিতে পরিণত হলো।

বছর কয়েক পরে, ইমতিয়াজ গ্রামের প্রধান হয়ে উঠল। সে সব সময় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসত এবং নিজের ইচ্ছেপূরণের কথা মনে রাখত। ইচ্ছেপূরণের কূপ তাকে শিখিয়েছিল, ইচ্ছে পূরণ হতে পারে, কিন্তু তার সাথে আসে বড় দায়িত্ব। ইমতিয়াজ সেই দায়িত্বকে গ্রহণ করে জীবনের পথে এগিয়ে গেল, আর নীলপুরের মানুষজন তাকে আজীবন মনে রাখল একজন সাহসী এবং মহৎ হৃদয়ের নেতা হিসেবে।

এভাবেই ইমতিয়াজের জীবন হয়ে উঠল এক সাহস আর মানবতার গল্প, যা সবার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে রইল।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক, আমাদের দেয়া এখানে এই গল্প দুটি কেমন লাগলো ? আশাকরি অনেক অনেক ভালো লেগেছে । আপনারা যদি এই রকম আরো নতুন এবং ইউনিক গল্প পেতে চান, তাহলে কমেন্ট করে আপনার গল্পের বিষয় এবং ইমেইল দিয়ে দিন । আমরা আপনাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি সুন্দর এবং নতুন গল্প লিখে দেবো । ধন্যবাদ, আমাদের অন্যান্ন পোস্ট গুলো চাইলে পড়ে দেখতে পারেন । আশাকরি ভালো লাগবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *