ভূমিকা :
বিজ্ঞান আমাদের জীবনে যে নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত তা আমরা প্রতিমুহূর্তে অনুভব করি। মানুষের জীবনকে সহজ, সাবলীল করার যে মহতী ব্রত তা পালন করে চলেছে নিরবধি। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে খুলে দিয়ে সাফল্য ও সম্ভাবনার এক অপার দুয়ার। মানুষের জীবনের নানান পর্যায়ে বিবিধ রকমের সেবা প্রদান করে বিজ্ঞান। মানবের সেবা ও কল্যাণে বিজ্ঞান সদা তৎপর৷
চিকিৎসায় বিজ্ঞান :
আগের চিকিৎসা পদ্ধতির সেই ভয়াবহ রুপের কথা একবার স্মরণ করলেই আমরা ধারণা পাই যে আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যায় বিজ্ঞান কত বড় অবদান রেখেছে। এখন মানুষের দেহের যেকোনো রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্ট করে প্রথমে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো জটিল বিষয়ও সম্ভব হয় চিকিৎসায় বিজ্ঞানের কল্যাণে।
যোগাযোগে বিজ্ঞান :
বিজ্ঞানের সবচেয়ে বিষ্ময়কর ব্যাপারগুলো আমরা দেখতে পাই সম্ভবত যোগাযোগের ক্ষেত্রেই। বাংলাদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বসে আমেরিকায় কথা বলার মতো নানান কল্পিত কাহিনি আমরা ছোটবেলায় শুনেছি। বিজ্ঞানের কল্যাণে সেই রুপকথার গল্প আজ সত্যি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের যোগাযোগ ও সামাজিকতার প্রচলিত ধারণা ভাঙছে প্রতিনিয়ত।
শিক্ষায় বিজ্ঞান :
শিক্ষাকে বিজ্ঞান করেছে সহজ, আধুনিক। দূর দেশের কোনো বিখ্যাত কলেজের লেকচারে অংশ নেয়া বা বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোনো কোর্স করা, সবই সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞানের কারণে। একটা বিখ্যাত বই আমি ঘরে বসে পড়তে পারি ই – বুক আকারে। যা শিক্ষক আগে চক ডাস্টারে লিখে বোঝাতেন, আজ সেসব শিশুরা দেখতে পায় অডিও বা ভিডিও স্লাইড আকারে। ফলে তা আত্নস্হ করা এখন আরো বেশি সহজ।
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান :
আমাদের জীবনের এখন এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে বিজ্ঞান অবদান রাখেনা। সকালে ব্রাশ করা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সবই বিজ্ঞানের ইশারায় চলে। কম্পিউটারের মতো প্রযুক্তি আমাদের জীবনের অনেক জটিল কাজকে সহজতর করে দিয়েছে। চিকিৎসা, যোগাযোগ, শিক্ষা, অবকাঠামো নির্মাণ, মহাকাশ গবেষণা, আবহাওয়া থেকে শুরু করে সকল কিছু। বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের বর্তমানের একদিনের জীবন কল্পনা করাই দুঃসহ!
উপসংহার :
মানবের কল্যাণের তরে আবিষ্কার হওয়া এই বিজ্ঞান করছে অনেক ক্ষতিও। শারীরিক, মানসিক ক্ষতির পাশাপাশি সময়ের অপচয় ঘটানো এর সবচেয়ে খারাপ দিক। তবে কল্যাণ বা ভালোর দিকটাই বেশি প্রাধান্য সম্পন্ন। তাই ক্ষতির দিক থেকে যতটা নিরাপদ দূরত্বে থেকে কল্যাণের দিকটাকে উপভোগ করা যায় সেই নিয়ে সচেতন হতে হবে আমাদের। তাহলেই বিজ্ঞান হবে শুধুই কল্যাণময়।