পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সেই বিষয় গুলো নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করতে যাচ্ছি । আশাকরি আপনি যদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে তা যদি না জানেন, তাহলে এই লিখা টা আপনার অনেক কাজে আসবে পুর্ন আশা রাখি । আসুন তাহলে দেখা নেই সেই বিষয় গুলো কি কি ?পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

আজকাল অনেক কারণেই আমাদের দেশের বাইরে যেতে হয়। হোক সেটা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কিংবা ভালো চিকিৎসা বা বিদেশে পড়াশোনা করার জন্য। আর প্রবাসে যেতে হলে যে আপনার কাছে অবশ্যই একটি পাসপোর্ট থাকা লাগবে, তা বোধ করি আপনি ইতোমধ্যে জানেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পাসপোর্ট করার জন্য যে ধাপগুলো পার করতে হয়, তা সঠিকভাবে না জানার কারণে নানাবিধ হয়রানির স্বীকার হয়ে থাকেন। তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন, বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত একটি লিগাল পাসপোর্ট খুব সহজেই আপনি কীভাবে পেতে পারেন-

পাসপোর্ট কী?

এক্কেবারে সহজ কথায় পাসপোর্ট হলো দেশের বাইরে ভ্রমণের জন্য স্বদেশি সরকার কর্তৃক অনুমতি স্বাপেক্ষে একটি ডকুমেন্ট। এছাড়াও পাসপোর্ট বিদেশে অবস্থানকালে আপনার জাতীয়তার পরিচয় বহন করে। সাধারনণত এটি আপনি বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস কিংবা দেশের বাইরে বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে পেতে পারেন। 

পাসপোর্টের ধরণঃ

বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সরকার কর্তৃক আপনি তিন ধরণের পাসপোর্ট ইস্যু করতে পারবেন। 

  • সরকারি পাসপোর্টঃ (নীল মলাট)
  • আন্তর্জাতিক সাধারণ পাসপোর্টঃ (সবুজ মলাট)
  • কূটনৈতিক পাসপোর্টঃ (লাল মলাট)

জন্মসূত্রে কিংবা অভিবাসনসূত্রে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। আর এসব নিয়ে আপনি যদি সরাসরিভাবে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে জেলা সদরে গিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল- বর্তমানে কিন্তু মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট আর ইস্যূ করা হয় না। ২০২০ সালের ২২ শে জানুয়ারি থেকে নাগরিকদের ই-পাসপোর্ট দেয়ার সুবিধা চালু করা হয়। এর মাধ্যমে পৃথিবীর ১২০তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট প্রবেশ করলো। যা আপনি অনলাইনেই আবেদন করতে পারবেন। আপনি যদি নতুন পাসপোর্ট আবেদনকারী হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমেই এই জিনিসগুলো সংগ্রহ করে নিন-

১। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদের সত্যায়িত দুই কপি ফটোকপি।

২। দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সদ্য তোলা)।

৩। পাসপোর্ট ফরম দুই কপি।

৪। ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ।

৫। নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট। (লাগতেও পারে, নাও লাগতে পারে। তবে জোগাড় করে রাখা ভালো)

এবার জেনে নিই পাসপোর্টের জন্য যে ধাপগুলো আপনাকে পার করতে হবে-

আচ্ছা, ধরলাম আপনি উপরের সবগুলো প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি যোগাড় করে ফেলেছেন। এবার তাহলে প্রসেসিং এ আসা যাক-

প্রথমেই আপনাকে কোন একটি ব্যংকে যেয়ে পাসপোর্ট ফী জমা দিতে হবে। ৩০ দিনের ভিতরে পাওয়ার জন্য আবেদন ফী হলো ৩৪৫০ টাকা। আর জরুরি ১৫ দিনের ভিতরে ডেলিভারি নিতে হলে আবেদন ফী হবে ৬৯০০ টাকা। আপনি এর জন্য সোনালি ব্যংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এশিয়া ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক বা এরকম যেকোন ব্যাংক কাউন্টারে গিয়েই টাকা জমা দিতে পারবেন।

এরপর আপনাকে পাসপোর্ট ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। এর জন্য www.passport.gov.bd ওয়েবসাইটে গেলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেখান থেকে ফর্ম ডাউনলোড দেয়ার পর এবার আপনাকে তা পূরণ করতে হবে। ভুল বা কাটাকাটি যাতে না হয় সেজন্য একাধিক কপি রাখবেন। এবার মনোযোগ সহকারে সরকারি নির্দেশনা মেনে ফর্মটি পূরণ করুন।

তারপর আপনাকে ছবি এবং ফর্ম একজন সরকারি প্রথম শ্রেণীর গ্যাজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়ন করে নিতে হবে। এই কাজটি আপনি যেকোন নোটারি থেকেও করে নিতে পারেন। 

সত্যায়ন এবং প্রত্যায়নের কাজ শেষ হলে এবার আপনাকে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট ফর্ম জমা দিতে হবে। আর সাথে লাগবে, উপরে উল্লিখিত কাগজপত্রাদি। সেখানে আপনার ফিংগারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলা হবে। এরপর পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনাকে একটি টোকেন দেয়া হবে। যেখানে আপনার যাবতীয় তথ্য এবং ডেলিভারি তারিখ দেয়া থাকবে। 

কিছুদিন পর পুলিশ ঠিকানা ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার বাসায় আসবে। তখন তারা আপনাকে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এন আই ডি জন্ম সনদ এগুলোও চাইতে পারে। তারপর আপনার পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে, মোবাইল এস এম এস এর মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। এবার আপনাকে শুধু পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে তা নিয়ে আসতে হবে। 

শেষ কথাঃ

মনে রাখবেন, পাসপোর্ট করার সময় অনেকে আপনাকে লোভ দেখিয়ে টাকা চাইতে পারে। এক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করবেন। আশা করি, আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি অল্প হলেও নতুন কিছু জানতে পেরেছেন। ধন্যবাদ পুরো সময় সাথে থাকার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *