পদার্থ কাকে বলে : বিজ্ঞান মানেই যুক্তিতর্ক আর গবেষণা। আর এই গবেষণা করতে গেলে অনেক সময়ই অনেক রহস্যের মুখেই পড়তে হয়। তবে বিজ্ঞানের যে শাখাটি সবচেয়ে রহস্যময় সেটি হল পদার্থবিজ্ঞান। আমাদের আজকের আলোচনা থাকছে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে প্রাথমিক ধারণা ‘পদার্থ’ নিয়ে।
তবে চলুন প্রথমেই জেনে আসা যাক-
পদার্থ কাকে বলে?
পদার্থ নিয়ে সবচেয়ে সাধারণ এবং সহজ যে সংজ্ঞাটি আমরা প্রায় সবাই ছোটবেলা থেকে পড়ে এসেছি তা হলোঃ যারা আকার,আয়তন এবং ওজন আছে তাকেই পদার্থ বলে। তবে এখানে ওজন না বলে ভর বলাটাই যুক্তিযুক্ত।আরো ভালো করে বলতে গেলে প্রোটন, ইলেকট্রন এবং নিউট্রন এর সমন্বয়ে গঠিত বস্তুকে পদার্থ বলে। আমরা যদি আরো একটু এলিমেন্টারি লেভেল থেকে বলতে চাই, তাহলে পদার্থ হলো কোয়ার্ক এবং লেপ্টন নামক ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত বস্তু। যেখানে কোয়ার্ক গুলি নিউট্রন এবং প্রোটনে একত্রিত হয়।আর সেগুলো ইলেকট্রনের সাথে যুক্ত হয়ে পর্যায় সারণির বিভিন্ন মৌল তৈরি করে। আবার সেই মৌলগুলো একে অপরের সাথে একত্রিত হয়ে নানা রকম পদার্থে পরিণত হয়।
পদার্থের বিভিন্ন প্রাকারভেদঃ
তাপমাত্রাভেদে পদার্থঃ
পরিবেশের তাপমাত্রা এবং অন্যান্য কিছু প্রভাবকের উপর ভিত্তি করে পদার্থ তিন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমনঃ কঠিন, তরল এবং বায়োবীয় বা গ্যাসীয় অবস্থা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বরফ হলো পদার্থের কঠিন একটি অবস্থা। আবার বরফের তাপমাত্রা যদি কিছুটা বাড়ানো যায় তবে তা তরল পানিতে পরিণত হয়। এই পানিকে যদি আবার 100 ডিগ্রী তাপমাত্রায় নিয়ে যাওয়া যায় তবে তা পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থার রূপ ধারণ করে। কিন্তু পানির এই তিন অবস্থাতেই তার রাসায়নিক সংকেত H2O. অর্থাৎ পদার্থ কিন্তু একটাই; তবে তাপমাত্রাভেদে এর অবস্থা তিন রকম হতে পারে।
গঠনভেদে পদার্থঃ
আবার গঠনের উপর ভিত্তি করে পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। মৌলিকপদার্থ এবং যৌগিকপদার্থ। যে পদার্থকে ভাঙলে কেবলমাত্র একটি মৌলই পাওয়া যায়, অর্থাৎ পর্যায় সারণির 118 টি মৌলের মধ্যে শুধু একটি মৌল বিদ্যমান তাকেই মৌলিক পদার্থ বলে। অন্যদিকে যেসব পদার্থকে ভাঙলে পর্যায় সারণির একাধিক মৌল এর অস্তিত্ব পাওয়া যায় তাকে যৌগিকপদার্থ বলে। যেমনঃ লোহাকে ভাঙলে আমরা লোহা কিংবা আয়রন ছাড়া আর অন্য কোন মৌল পাই না। কিন্তু পানিকে যদি আমরা বিশ্লেষণ করে দেখি, তবে এখানে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন এই ২ মৌল এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সুতরাং পানি একটি যৌগিকপদার্থ আর লোহা একটি মৌলিকপদার্থ।
তবে মনে রাখবেন উপরের আলোচনায় আমরা যে ধরনের পদার্থ নিয়ে আলোচনা করলাম তার সবই কিন্তু ব্যারিয়ন জাতপদার্থ কিংবা সাধারণপদার্থ। পদার্থবিজ্ঞান বড়ই রহস্যময়! আমাদের পরিচিত পদার্থছাড়াও এমন অনেক পদার্থ রয়েছে (যেমনঃ তমোপাদার্থ,তমোশক্তি, প্রতিপদার্থ) যার গঠন,চরিত্র এবং খুঁটিনাটি সব বিষয়ে আজও বিজ্ঞানীরা ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেননি। তাই আলোচনায় আমরা সেসব বিষয় নিয়ে আসি নি।