রাগ কমানোর উপায়

রাগ কমানোর উপায় ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করা হলো । আশাকরি কাজে আসবে । পৃথিবীতে রাগ নেই এমন মানুষ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেউ হয়ত খুব ছোট ছোট বিষয় এ রাগ করে আবার কেউ করে না এই যা পার্থক্য। তাই আজকে আমরা রাগ হওয়ার কারণ এবং তা থেকে মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

রাগ কমানোর উপায়
রাগ কমানোর উপায়

রাগ কেন হয় বা রাগ উঠার কারণ :

আমাদের মধ্যে অনেক এ আছে যারা অতি ছোট ছোট কারণে রেগে যাই।সেই কারণ গুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য কিছু কারণ হলো…….

★ ধৈর্য হারিয়ে ফেলা।
★ কোন বিষয় নিয়ে মনে হয় আমাদের সাথে অন্যায় বা অবিচার করা হচ্ছে।
★ মনে হয় আপনার মতামত বা চিন্তাধারার প্রশংসা করা হয় না।
★ ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে রাগ উঠে থাকে যেমনঃ সম্পর্ক জটিলতা,পছন্দের বস্তু না পাওয়া ইত্যাদি
★ অতিরিক্ত শব্দ দূষণ বা হঠাৎ এক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে রাগ উঠে যায়।
★ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হঠাৎ করে ঘটে যাওয়ার কারণ এ।

দৈনন্দিন জীবনে এমন হাজারো কারণ থাকে যার জন্য একজন মানুষ রেগে যায়। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক এখানে উল্লেখ করা হলো।

রাগ উঠার বৈজ্ঞানিক কারণ :

অনেক এ ভাবতে পারেন আমাদের রাগ শুধুমাত্র কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা আমাদের সাথে ঘটে। তাই আমাদের রাগ উঠে। এই কথা যদিও সত্য কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে না।কারণ আমাদের রাগ উঠার কারণ বৈজ্ঞানিক কারণ আছে।চলুন সেই কারণ জেনে আসি।

Read More >>  ওজন কমানোর সহজ উপায়

আমাদের মাথায় ছোট একটা অঞ্চল আছে।যাকে বিজ্ঞানীরা amygdala বলে। এই অঞ্চল আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ এর কাজ করে থাকে। Amygdala আমাদের দিকে বাহিরের থেকে কোন হুমকি আসলে সেটা চিহ্নিত করে এবং তার বিরুদ্ধে নিজেদের বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করে। এই Amygdala এতই দ্রুত পদক্ষেপ নেয় যে তা cortex(যা আমাদের মস্তিষ্কের চিন্তা এবং ন্যায় বিচার করে) আমাদের পদক্ষেপ এর কি পরিণাম হবে সেটার সম্পর্কে অবগত করতে পারে না।

রাগের জন্য যদি কোনো হরমোন কে দোষারোপ করতে হয় তাহলে Epinephrine এবং norepinephrine নামক দুইটি হরমোন বেশি দায়ী করা যাবে । এই দুইটি হরমোন মূলত Amygdala অঞ্চল থেকে নিঃসরিত হয় । যার ফলে মানুষ হঠাৎ রেগে যায় এবং কোন কিছু না ভেবে পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে।

রাগ কমানোর বৈজ্ঞানিক উপায় :

রাগ কখনো কারো জীবনে ভালো কিছু বয়ে আনে না। গবেষণায় দেখা গেছে একজন মানুষ জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত গুলো তার রাগ এর মাথায় নিয়ে থাকে। শুধু তাই নয় রাগ এর মাথায় মানুষ এমন কিছু কাজ করে থাকে যা নিজের কাছের মানুষ গুলোর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে । তাই আমাদের উচিত নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করা । সেই প্রেক্ষিতে রাগ নিয়ন্ত্রণ এর বৈজ্ঞানিক কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো।

Read More >>  ফুড পয়জনিং কেন হয় এবং এর থেকে নিরাপদ থাকার উপায়

স্বস্তিঃ অনুভব করার সবচেয়ে বড় উপায় হলো বড় বড় শ্বাস নেওয়া এবং আরামদায়ক মুহূর্ত কল্পনা করা।এতে আমাদের মাথার রাগ খুব সহজে ঠান্ডা হয়ে যাবে।

ব্যায়ামঃ শারীরিক ব্যায়াম রাগ ঠান্ডা করার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ । আপনি যদি রাগ এর মাথায় কিছু পথ হাঁটতে বের হয়ে যান বা দৌঁড়ান তাহলে অতি সহজ এ আপনার রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে। যদিও রাগের মধ্যে খেলা ধূলার ইচ্ছা থাকে না তারপরেও এইসময় কিছু খেলার চেষ্টা করতে পারেন । বিশেষ করে মুষ্টিযোদ্ধা বা Boxing করতে পারেন । এটি আপনার মনের ভিতরে জমে থাকা রাগ গুলো সব বের করে দিতে সাহায্য করবে।

পছন্দের কাজগুলো করা: আপনি চাইলে আপনার প্রিয় কোন গান এ নাচ করতে পারেন , কিছু সময় এর জন্য সাঁতার কেটে আসতে পারেন ,মনের পছন্দ অনুযায়ী ছবি আঁকতে পারেন । অর্থাৎ নিজের পছন্দের কাজে ব্যাস্ত থাকলে রাগ হওয়ার পিছনে যে কারণ থাকবে সেটা অতি সহজ এ ভুলে যাবেন এবং আপনার রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে।

Read More >>  আদার উপকারিতা ও গুণাবলী

মননশীলতাঃ ধ্যান মননশীলতা করার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি । যার কারণে রাগ হওয়ার কারণ অতি সহজে ভুলে যাওয়া যায়। তাছাড়া আপনি নিয়মিত ধ্যান করলে আপনি সহজে রাগান্বিত হবেন না।

উপরোক্ত বিষয় গুলো বিশেষ করে মননশীলতা প্রতিনিয়ত অনুশীলন করলে আপনার মন প্রফুল্ল থাকবে এবং নিজের রাগ এ অতি সহজ এ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

আজকের মতো এই পর্যন্ত।কালকে আবার নতুন কোন পোষ্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো।ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *