আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম

আবেদন পত্র বা দরখাস্ত হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চাকরি বা বিভিন্ন কাজের জন্য। এবং বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন সময় আমাদের দরখাস্ত করার প্রয়োজন পরে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে দরখাস্ত লেখার জন্য সবার মাঝেই প্রথম বার একটি অস্বস্তি অনুভব হয়ে থাকে। কারন কিভাবে শুরু করবো বা কি কি লিখতে হবে এবং নিয়ম কানুন গুলো ফলো করার একটি বিষয় থেকেই যায়। অপরদিকে কোন বিষয় অজানা থাকলে বা মনে মনে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও অন্য কারো সাহায্য গ্রহন করতে অস্বস্তি এবং লজ্জাবোধ হয়েই থাকে। কারন শিক্ষাগত যোগ্যতার বিপরীতে কারো কাছে সহযোগিতা চাওয়াটা সত্যি বিব্রতকর। এ কারনে আজ আমাদের লেখা কিভাবে দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লিখবেন।

দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লেখার নিয়মকানুন-

১: আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার শুরুতেই থাকবে যেদিন আপনি আবেদন পত্রটি লিখছেন তার তারিখ।
২: এরপরে যার কাছে আবেদন পত্র লিখবেন তার পদ লিখতে হবে বরাবর লিখে। বরাবর লেখার পরে কমা দিয়ে নিচের লাইনে তার পদ লিখবেন।
৩: যার কাছে আবেদন পত্রটি লিখবেন তার প্রতিষ্ঠানের নাম লিখতে হবে।
৪: প্রতিষ্ঠানের নাম লেখার পরে প্রতিষ্ঠানটি ঠিকানা লিখতে হবে।
৫: প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা লেখার পরে আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার গুরুত্বপূর্ণ অংশ অর্থাৎ যে বিষয় নিয়ে আপনি দরখাস্ত লিখছেন সে বিষয়টি লিখতে হবে।
৬: সম্মান সূচক শব্দ (জনাব,মহোদয়) ইত্যাদি দিয়ে তার পরের লাইল থেকে আবেদন পত্রের মূল উদ্দেশ্য লেখার পালা।
৭: এখানেই হচ্ছে দরখাস্তের বিষয় এবং কারন গুলো সুস্পষ্ট ভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে।যথাবিহিত সম্মান পূর্বক নিবেদন দিয়ে কোন চাকরি বা সাহায্য বা জনকল্যাণ বিষয়ক আবেদন পত্র হোক সে বিষয় টি সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করুন। অবশ্যই অপ্রয়োজনে আবেদন পত্র দীর্ঘ করা উচিত নয়।
৮: এর পরে অতএব লিখে আপনি যে কারনে আবেদন পত্রটি লিখছেন তা উপস্থাপন করুন।
৯: বিনীত নিবেদক দিয়ে আপনার নাম ঠিকানা দিন এবং প্রয়োজন বোধে যোগাযোগের ঠিকানা দিতে পারেন।
১০: এবার খাম বন্দী করে খামের উপর প্রেরক অর্থাৎ আপনার নাম ঠিকানা দিন এবং প্রাপক অর্থাৎ যাকে আবেদন পত্রটি পাঠাচ্ছেন তার নাম ঠিকানা দিন।

Read More  আমার ছেলেবেলা রচনা

উপরে আলোচিত এই সহজ কয়েকটি ধাপে আপনার আবেদন পত্র বা দরখাস্তটি লেখা সম্পন্ন করতে পারবেন। এবং এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই সঠিক নিয়ম কানুন অবলম্বন করে আবেদন পত্র লেখা শিখতে পারেন।

★ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশগ্রহণের অনুমতি চেয়ে তােমার বিদ্যালয়ের প্রধানের নিকট একটি আবেদন পত্র লেখ।

তারিখ : ২০/০৪/২০১৩ ইং
বরাবর।
প্রধান শিক্ষক,
সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সাতক্ষীরা।
বিষয় : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সাতক্ষীরা জেলা সদরের একাধিক গ্রাম। ইছামতি নদীর বাঁধ ভেঙে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আসা পানিতে সম্পূর্ণ থানা আজ বন্যা কবলিত। ইতােমধ্যে বহু বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে কৃষকদের গরু-বাছুর এবং তাদের সদ্য তােলা ফসল। অনেক জমির কাঁচা-পাকা ফসল সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার লােক এখন পানিবন্দি। বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রকট অভাব দেখা দিয়েছে, সেই সাথে নানা রকম পানিবাহিত রােগের প্রাদুর্ভাব। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কাজে সকলে এগিয়ে না এলে দুর্গতদেরকে বাঁচানাে সম্ভব হবে এমতাবস্থায় আপনার সদয় অনুমতিসাপেক্ষে আমরা বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে চাই।

Read More  বাংলা প্রবাদ বাক্য

অতএব, মহােদয়ের নিকট আকুল আবেদন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কাজে আমাদেরকে অংশগ্রহণের অনুমতি প্রদান করতে মর্জি হয়।

নিবেদক,
সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে লিমন, সাতক্ষীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *