এখানে সুদ ও ঘুষ নিয়ে উক্তি সম্পর্কিত হাদিস ও কোরআনের আয়াত দেয়া হলো আপনাদের জন্য । আশাকরি অনেক উপকার হবে । কোনো পণ্য বা অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত অর্থ বা পণ্য নেওয়াই সুদ। এই সুদ ও ঘুষ সমাজে অশান্তির মূল কারণ। ইসলামে সুদ নেওয়া হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। তাই সুদ ও ঘুষ সমাজে কতটা অশান্তি বয়ে আনতে পারে এর পরিণাম বোঝানোর জন্য মানুষের কাছে হেদায়েতের বানী পৌঁছানো দরকার। জানানো দরকার সুদ ও ঘুষের ভয়াবহতা সম্পর্কে। এজন্য কোরআন ও হাদীসে উল্লেখিত এ সম্পর্কে বাণী তুলে ধরা হলো। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
সুদ ও ঘুষ নিয়ে উক্তি হাদিস আয়াত :
দুর্নীতি ঘুষ নয়, ঘুষই দুর্নীতি। – অলিক আইস
ঘুষ ছোট হলেও বড় ধরনের দোষ। – এডওয়ার্ড কোক
ঘুষ আদান-প্রদানকারী উভয়েই জাহান্নামে যাবে। – তাবরানি
ঘুষের চেয়ে ব্ল্যাকমেইল বেশি কার্যকর । – জন লে কেরি
আল্লাহর দ্বীনে কোনো সুদ নেই। – হযরত ওমর (রাঃ)
আরো আছেঃ>>> সমাজ নিয়ে উক্তি
একজন রাজাকে অস্ত্রের জোরে পরাস্ত করা ঘুষের চেয়ে কম লজ্জাজনক । – স্যালুস্ট
সুদখোরের পেট সাপে পরিপূর্ণ থাকে। – মুসনাদে আহমাদ
যে বেশী সুদ খাবে, পরিণামে তার সম্পদ কমে যাবে। – ইবনে মাজাহঃ ২২৭৯
সততা দরজায় দাঁড়িয়ে ধাক্কা দেয় এবং ঘুষ প্রবেশ করে। – বার্নাবে রিচ
আল্লাহ কেনাবেচা তথা ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম। – সূরা বাকারাঃ ২৭৬
সুদ এমন এক বস্তু যার পরিণাম কমে যাওয়া যদিও সুদখোরের কাছে তা বৃদ্ধি মনে হয়। – ইবনু মাজাহ
ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ওপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হয়। – রাসূল (সাঃ)
সৎ লোকেদের ঘুষ দিতে পারবেন না, কিন্তু খারাপ লোকেরা ঘুষ গ্রহণ করবে । – অ্যান দ্বীপ
ঘুষ না দেওয়া সহজ কিন্তু একই সময়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া এতো সহজ নয়। – ওয়াং শি
কাগজে-কলমে আইন একটি সূক্ষ্ম জিনিস, কিন্তু বেদনাদায়ক যখন কোনো ঘুষ তাদের বাঁধন কমাতে পারে না। – পাওলো বেসিগালুপি
সুদের দ্বারা সম্পদ যতই বেড়ে যাক না কেন তার শেষ পরিণতি হলো নিঃস্বতা।- আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ)
সুদের শাস্তির ৭০টি স্তর রয়েছে। তার মধ্য সবচেয়ে নিম্নস্তর হলো নিজের মায়ের সাথে যেনা করা। – ইবনু মাজাহ
অন্যর নিকট হতে হাদীয়া ও উপঢৌকন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা তা ঘুষ আদান প্রদানের মাধ্যম। – মইনুল হুক্কাম পৃঃ১৭
আল্লাহ সুদকে বিলুপ্ত করেন এবং দান সদাকাকে বাড়িয়ে দেন। – তাইসিরুল
যে ব্যক্তি প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহণ করবে, তার ও বেহেশতের মাঝে সেই ঘুষ বাধা হয়ে দাঁড়াবে। – আবদুর রহমান বিন আওফ (রাঃ)
প্রকৃতপক্ষে, ঘুষ, পক্ষপাতিত্ব এবং বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি শুধু রাজনীতিতেই নয়, সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। – ডেভিড ম্যাককালো
যে সুদ তোমরা মানুষের সম্পদের সাথে মিশে বাড়ানোর জন্য দাও তা আল্লাহর কাছে বাড়ে না। – সূরা রুমঃ ৩৯
হে ঈমানদারগণ! চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খাওয়া বন্ধ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো তাহলেই তোমরা সফলকাম হবে। – আল ইমরানঃ ১৩০
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো ও সুদের যা বকেয়া আছে তা বর্জন করো যদি তোমরা সত্য মুমিন হয়ে থাকো । – সূরা বাকারাঃ২৭৮
যে ব্যক্তি একাধিকবার ঘুষ আদান-প্রদানের অপরাধে লিপ্ত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়, তাকে আগের চেয়ে অধিক কঠোর শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব। – সংগৃহীত
রাসূল (সাঃ) সাতটি ধ্বংসকারী জিনিস থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। তন্মধ্যে একটা হলো সুদ খাওয়া। – মুসলিম, কিতাবুল ঈমানঃ১৭০
বুঝেশুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ছত্রিশবার ব্যভিচারের চেয়েও অধিক গুনাহের কাজ। – মুসনাদে আহমদঃ ১০৩৩
কোনো অধিবাসীদের মধ্যে ব্যাপকহারে সুদের প্রচলন হলে তারা দুর্ভিক্ষে পড়ে যায়। আর তাদের মাঝে মাত্রারিক্ত ঘুষ দেখা দিলে তারা শত্রুর ভয়ে ভীতু হয়ে পড়ে। – মুসনাদে আহমাদ
সোনার বিনিময়ে সোনা, রুপার বিনিময়ে রুপা, জবের বিনিময়ে জব, আটার বিনিময়ে আটা, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর এমনিইভাবে সমজাতীয় দ্রব্যের নগদ আদান-প্রদানে অতিরিক্ত কিছু হলেই তা সুদের পর্যায়ে যাবে। – মুসলিম
যে ব্যক্তি সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় সবাইকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) লানত করেছেন। – তিরমিজিঃ ১২০৬
যে ব্যক্তি নিজের মুসলিম ভাইয়ের জন্য সুপারিশ করার বিনিময়ে উপহার দিতে চায় এবং সেই উপহার গ্রহণ করে। তবে সে সুদের এক বড় দ্বারপ্রান্তে পদাপর্ণ করবে। – মুসনাদে ইমাম আহমদ ও সুনানে আবু দাউদ
সমাজে সুদ ঘুষের ব্যাপক প্রসার নিজেদের ঈমান নষ্ট করার অন্যতম হাতিয়ার। সুদ ও ঘুষ শুধু ঈমানেই আঘাত হানে না ব্যক্তি পর্যায়ে নিঃস্ব করে দেয়। তাই যথাসম্ভব আমাদের সুদ-ঘুষ থেকে দূরে থাকতে হবে। আর সুদ ঘুষের ভয়াবহতা প্রচারের জন্য উপরিউক্ত বাণী সবার মাঝে শেয়ার করবেন। হয়তো আপনার একটা শেয়ারে এরকম গর্হিত কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবে।