তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম : ফরজ ইবাদাত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পর তার আরও নৈকট্য অর্জনের জন্য রাসুল(সঃ) আমাদের দেখিয়ে গিয়েছেন এক সহজ পন্থা। আর সেই পন্থা হলো নফল ইবাদত। নফল ইবাদতের মাধ্যমেই কেবল একজন আল্লাহর বেলায়াত বা নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হতে পারে। আর কুরআনে বর্ণিত এমনি একটি নফল ইবাদতের নাম হলো তাহাজ্জুদ। আজকে এই তাহাজ্জুদ সালাত সমন্ধে আমরা একটু বিস্তারিত জানব।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম
রাসুল(সঃ) তাহাজ্জুদ সালাত ২ রাকাত করে করে আদায় করতেন। তাই আপনিও তাই করবেন। আর এক্ষেত্রে কিরাত নবিজি(সঃ) অনেক বড় করতেন তাই আপনিও তারই অনুসরণে সেই চেষ্টাই করবেন।
ওয়াক্ত বা সময় ( তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ):
তাহাজ্জুদ নিয়ে অনেকের মনেই কিছু প্রশ্নের উত্থান হয় তার মধ্যে একটি হলো কখন পড়ব তাহাজ্জুদ। এক্ষেত্রে আশা করি নিম্নোক্ত উত্তরটি আপনার জন্য উপযুক্ত হবেঃ
এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদের সময় থাকে। তবে মধ্য রাতে আদায় করা ভালো এবং শেষ ভাগে আদায় করা সর্বোত্তম।
– তাহাজ্জুদ নামায ২ থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন ২ রাকাত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত। রাসুলুল্লাহ (সঃ) ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা পড়াই আবশ্যক নয় কেননা ২ থেকে ১২ পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা আছে।
আর সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ আদায় করা উচিত। তবে ৮ রাকাত আদায় করা উত্তম। অপরদিকে সম্ভব না হলে ৪ রাকাত আদায় করা। যদি সেটিও আপনার জন্য সম্ভব না হয় তবে ২ রাকাত হলেও তাহাজ্জুদ আদায় করুন। আর তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো কাজা নেই।
তাহাজ্জুদের গুরুত্বঃ
কুরআন মজিদে পাচ ওয়ক্ত সালাতের কথাও এভাবে আসেনি যেমনটা এসেছে তাহাজ্জুদের সালাতের ক্ষেত্রে। আর প্রিয় নবি(সঃ)ও এমনটাই আদেশ করেছেন। তবে তিনি উম্মতের উপরে ফরজ যেন না হয়ে যায় সেই ভয়ে একে জামাআতের সাথে পড়ার কথা বলেননি। তবে তিনি অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে এটি পড়ার কথা বলেছেন।
তাহাজ্জুদ সালাতের বর্ণনাঃ
প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(রহ.) তার আল ফিকহুল আকবার গ্রন্থের অনুবাদে নিম্নোক্ত বর্ণনাটি প্রদান করেনঃ
সালাতুর ইশার পর থেকে ফজরেত উন্মেষ পর্যন্ত সময়ে নফল সালাত আদায় করলে তা কিয়ামুল্লাইল বা সালাতুল্লাইল।
তিনি আরও বলেন যে,
তাহাজ্জুদ অর্থ ঘুম থেকে উঠা। রাতে ঘুম থেকে উঠে কিয়ামুল্লাইল আদায় করাকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। কেউ যদি ইশার সালাত আদায় করে রাত ৯টা বা ১০টায় ঘুমিয়ে পড়েন এবং ১১/১২ টায় উঠে নফল সালাত আদায় করেন তবে তা কিয়ামুল্লাইল ও তাহাজ্জুদ বলে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে কেউ যদি ইশার পরে না ঘুমিয়ে রাত ২/৩ টার দিকে কিছু নফল সালাত আদায় করেন তবে তা কিয়ামুল্লাইল বলে গণ্য হলেও তাহাজ্জুদ বলে গণ্য নয়।
(বিস্তারিত দেখুনঃ আল-ফিকহুল আকবার — অনুবাদ ও ব্যাখ্যা, লেখক- খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর)