নামাজ নিয়ে উক্তি : প্রিয় পাঠক, নামায নিয়ে এখানে ২৬ টি আয়াত ও হাদিস দেয়া হয়েছে । ১৩ টি হলো সরাসরি পবিত্র কোরআনের বাণী বা আয়াত আর বাণী ৯ টি হলো সহিহ হাদিস ও ৫ টি মুসলিম মনিষীদের উক্তি । তো চলুন দেখা যাক উক্তি গুলো ।
নামাজ নিয়ে ১৩ টি কোরআনের উক্তি বা আয়াত :
১ঃ আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাযে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয় ।
— সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ৪৩
২ঃ ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে । অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন । কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব ।
— সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ৪৫
৩ঃ তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর এবং যাতাক দাও । তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎ কর্ম প্রেরন করবে, তা আল্লাহ্র কাছে পাবে । তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা প্রত্যক্ষ করেন ।
— সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ১১০
আরো আছেঃ>> ধৈর্য নিয়ে উক্তি
৪ঃ হে মুমিন গন ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর । নিশ্চিতই আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথেই রয়েছেন ।
— সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ১৫৩
৫ঃ সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে । আর আল্লাহ্র সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও ।
— সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ২৩৮
আরো আছেঃ>> সততা নিয়ে উক্তি
৬ঃ হে বনী আদম ! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না । তিনি অপব্যয়ীদের কে পছন্দ করেন না ।
— সূরা আল আরাফ, আয়াতঃ ৩১
৭ঃ আর যেসব লোক সুদৃঢ় ভাবে কিতাবকে আঁকড়ে থাকে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে নিশ্চয় আমি বিনষ্ট করবো না সৎ কর্মীদের সওয়াব ।
— সূরা আল আরাফ, আয়াতঃ ১৭০
৮ঃ আমিই আল্লাহ্ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই । অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর ।
— সূরা তোয়া-হা, আয়াতঃ ১৪
৯ঃ নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রসূলদের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও ।
— সূরা আন নূর, আয়াতঃ ৫৬
১০ঃ সবাই তার অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না ।
— সূরা আর রুম, আয়াতঃ ৩১
১১ঃ হে বতসো, নামায কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদ আপদে সবর কর । নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ ।
— সূরা লোকমান, আয়াতঃ ১৭
১২ঃ যারা আল্লাহ্র কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না ।
— সূরা ফাতির, আয়াতঃ ২৯
১৩ঃ মুমিন গণ, জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহ্র স্মরণের পানে তরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর । এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ ।
— সূরা আল জুমুআ, আয়াতঃ ৯
নামাজ নিয়ে / সম্পর্কিত ৯ টি সেরা হাদিস :
এখানে নামাজ নিয়ে আরো কিছু হাদিসের উক্তি দেয়া হলো । আশাকরি অনেক কাজে আসবে আমাদের এই বাছাই করা হাদিস গুলো । তো চলুন তাহলে পড়ে দেখা যাক হাদিস গুলোঃ
১ঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমার উম্মতের উপর সর্বপ্রথম নামাজ ফরজ করেছেন এবং কেয়ামতের দিন সবার আগে নামাজের হিসাব নেয়া হবে।
— আল হাদিস
২ঃ ইসলামের নিদর্শন একমাত্র নামাজ। যে ব্যক্তি একাগ্রচিত্তে ওয়াক্ত ও সময়ের প্রতি লক্ষ রেখে নামাজ পড়ে সেই মুমিন ।
— আল হাদিস
৩ঃ নামাজের দ্বারা শয়তানের মুখ কালো হয়ে যায়।
— আল হাদিস
৪ঃ কোন ব্যক্তি যখন নামাজে দাড়ায় তখন আল্লাহপাক তার দিকে পূর্ণ মনোযোগ দেন। আর যখন সে নামাজ থেকে সরে যায়, তখন আল্লাহও মনোযোগ সরিয়ে নেন।
— আল হাদিস
৫ঃ কোন পাপের কারণে কোন নামাজি জাহান্নামে প্রবেশ করলেও তার সেজদার অঙ্গ জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা।
— আল হাদিস
৬ঃ মানুষ নামাজে দাড়ালে তার জন্য বেহেশতের দরজা খুলে যায় এবং আল্লাহ তায়ালা ও নামাজিদের মধ্যে কোন পর্দা থাকে না।
— আল হাদিস
৭ঃ সলাত জান্নাতের চাবিকাঠি
— হযরত মুহম্মদ (সাঃ)
৮ঃ সলাতের জন্যে অপেক্ষমাণ ব্যাক্তি সলাতের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।
— হযরত মুহম্মদ (সাঃ)
৯ঃ মানুষের ঈমান এবং শিরক ও কুফরের মধ্যকার পার্থক্য হলো সলাত পরিহার করা।
— হযরত মুহম্মদ (সাঃ)
নামাজ বা সালাত সম্পর্কিত মুসলিম মনিষীদের বাণী
১। আল্লাহর যিকরে, সলাতে এবং কুরআন তিলাওয়াতে যে ব্যক্তি সুখ খুঁজে পায় না, সে অন্য কোথাও তা খুঁজে পাবে না।
— আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)
২। আমি জান্নাতের চেয়ে নামাজকে বেশি ভালোবাসি । কারণ জান্নাতের সুখ আমার নিজের জন্য আর নামাজ আমার মহান রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি জন্য ।
— হযরত আলী ( রাঃ)
৩। আল্লাহর শপথ! যদি আমি না খেয়ে সারাদিন রোযা রাখি, সারারাত না ঘুমিয়ে সলাতে দাঁড়িয়ে থাকি, আমার সমস্ত সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করি; এরপর যদি যারা আল্লাহকে মেনে চলেন এমন মানুষদের প্রতি অন্তরে ভালোবাসা না রেখে এবং যারা আল্লাহর অবাধ্য তাদের প্রতি অন্তরে ঘৃণা না রেখে মারা যাই ; সেই কাজগুলো আমাকে একটুও উপকৃত করবে না।
— আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ)
৪। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত দিনগুলোতে সাওম পালন করা এবং রাতের বেলা সলাতে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া এই পৃথিবীর আর কোন কিছুকে ছেড়ে যেতে আমি দুঃখবোধ করি না।
— আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ)
৫। ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম। সুতরাং, জেগে উঠুন এবং নামাজে দাঁড়িয়ে যান। এর মাধ্যমে আপনি আপনার অহং (ইগো) থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন।
— তারিক রামাদান
আল্লাহ সবাইকে কবুল হওয়ার মত নামাজ আদায় করার তাওফীক দান করুন ৷
আমীন