একটি বাংলা রম্য গল্প

সারাদিন বাসার এত কাজ করতে আমার আর ভালো লাগে না। চারজন মানুষের কাজ একা করা অনেক কষ্ট। একটা মানুষ নাই যে আমাকে সাহায্য করবে। এই বয়সে মায়ের কত কাজ করে দিতাম আরা আমার মেয়ে কাজ তো করেই না বরং সারাদিন তার কাজ করতে করতেই আমার দিন শেষ হয়ে যায়।

রিমিঃ আম্মু সকাল সকাল আবার শুরু করে দিলা তোমার রেডিও।

মাঃ তোর এশবে কান দিয়ে কাজ নাই, যা তুই মোবাইল এ মুখ দিয়ে থাক।

রিমিঃ আচ্ছা, আম্মু। আমি আজকে থেকে আমার কাপড় নিজেই ধুয়ে ফেলব। তোমাকে আরা আমার কাপড় ধুয়ে দিতে হবে না।

মাঃ থাক, তোর আর আমার কাজ বাড়াতে হবে না। নিজের পড়াশুনা টা মন দিয়ে কর। আর শোন, বাসায় একটু পড়ে মেহমান আসবে। নিজের রুমটা গুছায় রাখিস।

রিমি (মনে মনে): এটাই সুযোগ। মেহাম্ন আসার আগেই আমি গোসল করতে চলে যাব। আর নিজের কাপড় ধুয়ে আম্মুকে চমকে দিব।

আধা ঘণ্টা পরে রিমিদের বাসায় মেহমান আসল।রিমি তার আগেই যথারীতি গোসলে ঢুকে গেল। কিছুক্ষন পরেই রিমি হঠাৎ খেয়াল করল, বাথরুমে কাপড় ধোঁয়ার কোনো সাবান নেই। এখন তো বাইরে বের হয়ে সাবান নিতেও পারবে না। আবার, আজ তার মাকে দেখাতেই হবে সে অনেক কাজ করে। রিমির চোখে পড়ল ফেসওয়াশের একটা বোতল। তার মনে হল, সাবান নাই তো কি হয়েছে, ফেসওয়াশ তো আছে। যেই ভাবা সেই কাজ। ধুয়ে ফেলল তার জামা। আর বেশ অনেকক্ষণ পর বাথরুম থেকে বের হয়ে আসল।মেহমান ও চলে গেছে ততক্ষনে। রিমির মা রিমির কাপড় ধোঁয়া দেখে সত্যি অনেক খুশি আজ। আমার মেয়ে কাজ শিখে গেছে তাহলে।

বিকেল বেলা তিন্নি (রিমির বড় বোন) হঠাৎ চিৎকার করে মাকে ডেকে বলল,

তিন্নিঃ আমি তোমাদের বলছিলাম, আমার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুবা না। আমার ৮০০ টাকা দামের ফেসওয়াশ তো একদিনে খালি করে ফেলছ তোমরা।

মাঃ ওইটা কে ধরবে? কেউ ধরে নাই। নিজেই হয়ত ঢেলে ফেলছিস ভুল করে। আর এখন বাসার সবার দোষ দিচ্ছিস। ছোট বোনকে দেখে কিছু শিখতে পারিস তো। নিজের কাপড় আজকে নিজেই ধুইছে।

পাশের রুমে রিমি হেসে প্রায় গড়াগড়ি খাচ্ছিল। আর ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছিল, “৮০০ টাকার ফেসওয়াশ দিয়ে জামা ধুইয়েছেন কেউ কখনও?”

বি.দ্রঃ বাড়ির ছোট মেয়েরা দুষ্ট হয় সব সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *