ভালোবাসার গল্প ( একটি সত্যিকারের ভালোবাসা )

ভালোবাসার গল্প নিয়ে আমাদের আজকের লিখা । নিচে একটি সুন্দর ভালোবাসার গল্প লিখা হয়েছে শুধু মাত্র আপনাদের জন্য । এই ভালোবাসার গল্প টি পড়ে দেখুন, আশা করি অনেক ভালো লাগবে । কারন শুধু মাত্র সেরা ভালোবাসার গল্প টাই আমরা বাছাই করে লিখেছি । এই গল্প একটি বই থেকে লিখা হয়েছে । তাই যদি কোন ভুল পেয়ে থাকেন কিংবা কারো জীবনের সাথে মিলে যায়, তাহলে তা কাকতালীয় । সবাইকে ধন্যবাদ, গল্প টি পড়ার অনুরোধ রইলো আর নিচে কমেন্ট করে আপনার ভালো লাগা আমাদের জানাবেন । গল্পটি ৩ টি পার্টে লিখা হয়েছে । Read more >>> valobashar smsভালোবাসার গল্প

ভালোবাসার গল্প (পার্ট ১) ঃ

সপ্না আর নিলয় ছোট বেলা থেকেই এক সাথে বড় হয় । সপ্নার বাবা ট্যাক্সি চালায়, আর নিলয়ের বাবা একজন গ্রাম্য ডাক্তার । দুই ফ্যামিলির মধ্যে সম্পর্কটা খারাফ নয় । সপ্না নিলয়কে মনে মনে ভালোবাসতো । কিন্তু কখনো বলতে পারে নি । তারা একত্রে অনার্স পাশ করে । নিলয়ের সরকারী চাকরি হয় । বাসা থেকে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়ে দেয় । সপ্না বেচারি ঘরে বসে একা কাঁদে । কিছুই করার থাকে না তার ।

সপ্নার অবস্থা দেখে তার মা সপ্নাকে চেপে ধরে । জিজ্ঞেস করে সমস্যা কি ? কান্নাবিজড়িত গলায় সপ্না জানায় তার লুকানো প্রেমের কথা । তার একপেশে ভালোবাসার কথা । সপ্নার পরিবারে দুঃখ নেমে আসে । সপ্নার বাবা জানতে পেরে মেয়েকে জলদি বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে চান । কিন্তু সপ্নার এক কথা, তার মনের কোঠায় গভীরে সে নিলয়কেই বসিয়েছে । এখন কোন অবস্থাতেই তার বিয়ে করা সম্ভব নয় । সে এমনকি এই বলে হুমকি দেয় যে – বাড়াবাড়ি করলে সে আত্মহত্যা করবে । সপ্নার পরিবারের সবাই খুব ভয় পেয়ে যায় । সাথে সাথে কষ্টও পায় । একমাত্র মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই ।

ভালোবাসার গল্প ( পার্ট ২) ঃ

বছর পাঁচেক পরের ঘটনা । সপ্না এখন ঢাকাতে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষিকা । গ্রামে ইদানিং যায় না সে। বাবা মার সাথে ফোনে কথা হয়। ইদের ছুটিতে ৫ দিনের জন্য গ্রামে গেলো সে। সে কি তখনো জানতো এই বারের গ্রামে ফেরা তার জীবনটা আমূল পাল্টে দেবে ? সপ্না বাসায় ফিরে দেখে বাসার সবার মাঝেই একটা কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে । সপ্না মাকে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে ? সপ্নার মা প্রথমে সপ্নাকে কিছুই বলে না। মেয়ের চাপাচাপিতে তিনি সব খুলে বলেন ।

নিলয় গ্রামে এসেছে। তার একটা ফুটফুটে বাবু হয়েছে। বাবুটার বয়স মাত্র ২ বছর । বাবুটাকে জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা যায়। নিলয় গ্রামে এসে সপ্নার মা বাবার সাথে দেখা করতে আসে। ছেলেটার মনে এক অদ্ভুত ক্ষোভ দেখতে পান তারা । এক চাপা কষ্ট । সপ্না ঘটনা শুনে থ হয়ে যায়। জীবনটা কোন সিনেমা নয় যে নিলয়ের বাচ্চাকে বড় করবে । তাকে নিজের মেয়ের মত করে পালেব। কিন্তু সপ্নার খুব ইচ্ছে করে। আরো একবার সপ্না নিজের কাছে হেরে যায়। মুখ ফুটে বলতে পারে না তার গোপন ইচ্ছের কথা।

ভালোবাসার গল্প (পার্ট ৩) ঃ

ইদের ছুটি শেষ। আজ বিকেলে সপ্না ঢাকায় ফিরে যাবে। ব্যাগ গুচাচ্ছে এসময় সপ্নার মা দৌড়ে এসে খবর দিলেন নিলয় এসেছে। সপ্না চমকে যায়। সে চাচ্ছিলো যেন নিলয়ের সাথে তার দেখা না হয় । কি লাভ কষ্টের বোঝা বাড়িয়ে ? মায়ের কথায় অবশেষে নিলয়ের সাথে দেখা হয় তার। দুজনেই চুপচাপ। হটাত নিলয় বলে উঠে ” ঢাকায় থাকো শুনলাম ” ? আমিও ঢাকায় থাকি । পরিবাগে । তুমি ? সপ্না উত্তর দিলো – “ধানমন্ডিতে, আমরা দুজন ফ্রেন্ড একসাথে থাকি । ও আমার সাথে একই স্কুলে পড়ায়। আমাদের পাশের গ্রামেরই মেয়ে ।”

এভাবে আরো কিছু কথা বলে তারা। একে অপরকে বিদায় জানায়। “ভালো থেকো” বলে নিজের রুমের দিকে হাঁটতে থাকে সপ্না। অজানা কষ্টে বুকটা ধুমরে মুচড়ে যাচ্ছে। নিজের মনের উপর অসম্ভব জোর খাটিয়ে ফিরে চলে সে রুমের পথে। ঘাড় ঘুরিয়ে শেষ বারের মত ফিরে তাকায় সে। দেখলো নিলয় দাঁড়িয়ে আছে তার কোলে একটা ফুটফুটে বাচ্ছা নিয়ে। নিলয়ের চোখটা ভেজা। দূর থেকেও দেখা জাচ্ছে অশ্রুকণা গুলো। কেন যেনও বাচ্চা টাকে দেখার পর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না সপ্না ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x