বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান রচনা

বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান রচনা

ভূমিকা: অপার সৌন্দর্যের লীলা ভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। সবুজে শ্যামলে ঘেরা বাংলাদেশে যেন সৌন্দর্যের কোন কমতি নেই। আমাদের দেশ আয়তনে ছোট হলেও দর্শনীয় স্থানের কোন ঘাটতি নেই। আমাদের বাংলাদেশের আয়তম মাত্র ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। কিন্তু ক্ষুদ্র আয়তনের দেশটিতে রয়েছে পাহাড়, বন এবং সমুদ্র যেখানে সকল সময় বহু পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়াও আমাদের দেশে রয়েছে বিভিন্ন প্রাচিন স্তপত্য যা আমাদের ইতিহাসকে আরো গৌরবান্বিত করেছে। যা একদিকে মানুষের সৌন্দর্যের তৃষ্ণা মেটাতে পারে। ঠিক তেমনি আমাদের পর্যটন শিল্পে বিশাল অবদান রাখে। আমাদের দেশে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। যেমন, কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন, নিঝুম দ্বীপ, সুন্দরবন ইত্যাদি।

দর্শনীয় স্থানের প্রয়োজনীয়তা: মানুষ মাত্রই সুন্দরের পূজারী। আমাদের নিত্য দিনের কাজের চাপ ও একঘেয়েমি হতে নিস্তার পেতে আমরা চাই একটু বিনোদন। পরিবার পরিজনের সাথে একটু সুন্দর সময় পার করতে দর্শনীয় স্থান ভ্রমনের কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যে গুলো একটি দেশ ও জাতির পরিচয় বহন করে। এছাড়াও একই সাথে এটি দেশের অর্থনৈতিক খাতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কারন একটি দেশে যতবেশি পর্যটন কেন্দ্র বা দর্শনীয় স্থান থাকবে ততই বেশি আয় করতে পারবে দেশটি এই পর্যটন খাত হতে। যা দেশের অর্থনৈতিক খাতকে আরো গতিশীল করে তুলতে সক্ষম।

Read More >>  ইতিহাস পাঠ করা প্রয়োজন কেন

বাংলাদেশের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান: প্রতিটি দেশেই কম বেশি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ঠিক তেমনি আমাদের দেশেও রয়ে। যেখানে বছরের সকল সময়ই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। বাংলাদেশের এমন কয়েকটি স্থান হলো:-

সাজেক ভ্যালি: বাংলাদেশে-র রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাই উপজেলায় সাজেক ইউনিয়নের একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থল হচ্ছে সাজেক ভ্যালি বা সাজেক উপত্যকা। রাঙামাটির একদম উত্তরে অবস্থান এই সাজেক ভ্যালির। এখানে রুইলুই এবং কংলাক নামে রয়েছে দুটি পাড়া। আঠারো শত পঁচাশি সালে প্রতিষ্ঠিত এই রুইলুই পাড়া এক হাজার ৭২০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এটি বর্তমানে পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি স্থান। এবং দিন দিন এখানে পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কক্সবাজার: কক্সবাজার হচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। যেখানে সারা বছরই পর্যটকদের ভীড় লেগেই থাকে। এখানে যে শুধু মাত্র দেশি পর্যটকদেরই আনাগোনা থাকে তা কিন্তু নয় বরং এখানে বিপুল পরিমান বিদেশি পর্যটকদের ও আগমন ঘটে সারা বছর। এটি যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত নয় এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ: বাংলাদেশের এক মাত্র প্রবাল দ্বীপ হচ্ছে এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এটি বাংলাদের মূল ভূখণ্ডের সবচাইতে দক্ষিণে অবস্থিত। এবং এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ কক্সবাজার শহর হতে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ। স্থানীয়রা এটিকে নারিকেল জিঞ্জিরা বলেও ডাকে। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ঘেরা এই দ্বীপটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে।

Read More >>  দোয়া মাসুরা

সুন্দরবন: বাংলাদেশে যে সকল দর্শনীয় স্থান রয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম হলো সুন্দরবন! এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রেভ বনভূমি। অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের মতো সুন্দরবনেও বহু পর্যটকদের ভীড় দেখা যায়। এটি একদিকে যেমন বাংলাদেশের জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখছে ঠিক তেমনি এদেশের পর্যটন খাতকে করেছে সমৃদ্ধ। সুন্দবন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বনভূমি। আপনি চাইলে আপনার পরিবার পরিজন নিয়ে কোন একটি ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন এই সুন্দরবনে!

কুয়াকাটা: বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত এবং পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে এই কুয়াকাটা। পর্যটকদের নিকট ‘সাগর কন্যা’ হিসেবে পরিচিত এই কুয়াকাটা। ১৮ কিলো মিটার দৈর্ঘ্যের সমুদ্র সৈকত বিশিষ্ট কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর সমুদ্র সৈকত। এটিই হচ্ছে আমাদের দেশের এক মাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়েরই দেখা মেলে।

এছাড়াও জানা অজানা ছোট বড় আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে আমাদের এই দেশটিতে।

Read More >>  বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট রচনা

দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র রক্ষায় আমাদের ভূমিকা: দর্শনীয় স্থান যেমন আমাদের বিনোদনের যায়গা ঠিক তেমনই এটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কারন বিভিন্ন কারনে এই দর্শনীয় স্থান গুলো তার জৌলুশ হারিয়ে ফেলছে। যার জন্য দায়ী মানুষেরা। তাই এসকল দর্শনীয় স্থান রক্ষণাবেক্ষণ এবং সুন্দর রাখা একটি দেশের সরকার এবং নাগরিক উভয়ের দায়িত্ব!

উপসংহার: আমাদের বাংলাদেশ একটি ক্ষুদ্র আয়তনের একটি দেশ। তবে আয়তনের তুলনায় এই দেশটিতে অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি পরিমান দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। যা আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থে সৌভাগ্যের। তবে এসকল স্থান যেন তার জৌলুশ হারিয়ে না ফেলে তার জন্য আমাদের সকলের সচেতন হতে হবে। এবং এসকল স্থান বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *