কবর নিয়ে স্ট্যাটাস

Rate this post

এখানে কবর নিয়ে অনেক গুলো স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছে । এই স্ট্যাটাস উক্তি হাদিস এবং কোরআনের হায়াত গুলো থেকে আমাদের অনেক কিছু জানার এবং শেখার আছে । প্রত্যেকটি স্ট্যাটাস জীবনের অস্থায়ীতা ও আখিরাতের চিরন্তনতার দিকে ইঙ্গিত দেয়। এগুলো শুধু স্ট্যাটাস নয়, জীবনের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক।কবর নিয়ে স্ট্যাটাস

Table of Contents

কবর নিয়ে স্ট্যাটাস :

কবর একমাত্র স্থান, যেখানে মানুষ আর কোনো প্রকার পরিচয়ের প্রয়োজন রাখে না। সবার পরিচয় এক– একটি মৃত দেহ।😔

কবরের নীরবতা আমাদের জীবনের অস্থিরতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। এই নীরবতাই প্রকৃত চিরন্তন শান্তি।😔

কবরের মাটি বলে, ‘আমি অপেক্ষা করছি, ফিরে এসো আমার বুকে।’ আমরা এই ডাক কতদিন উপেক্ষা করব?😔

জীবনের শেষ ঠিকানা হলো কবর। যত সংগ্রামই করি, শেষমেশ এখানেই ফিরে আসব।😔

কবরের মাটির নীচে আমাদের অহংকারের কোনো মূল্য নেই। সেখানে শুধু আমল ও কর্ম কথা বলে।

কবরের ঘুটঘুটে অন্ধকারে আলোর মতো জ্বলবে কেবল সৎকর্ম। সে আলো কি আমি জ্বালিয়ে যেতে পারছি?

কবর বলে, ‘যে জীবনের জন্য এত দৌড়, তার শেষ কোথায় দেখো।’ এই কথাটা কখনও ভেবে দেখেছ?

একদিন আমাদের নাম আর স্মৃতিও কবরের মাটির মতোই বিস্মৃত হবে। তাই ভালো কাজ রেখে যাও।

কবরের ভিতর থেকে কেউ ফিরবে না, তবে কবর প্রতিদিন আমাদের জীবনকে উপদেশ দেয়।

যে কবরের নিঃসঙ্গতা ভীতিকর, সেই কবরেই শুরু হয় আসল জীবনের হিসাব।

কবর শুধু মাটির নয়, এটি আমাদের অহংকার, লোভ আর পাপের শেষ ঠিকানা।

জীবন কেমন কাটালাম, তা কবরের অন্ধকারে প্রবেশ করার মুহূর্তেই পরিষ্কার হবে।

যত গৌরব, যত সঞ্চয়—সবই কবরের দরজায় এসে থেমে যায়। তারপর আমরা একা।

কবর প্রতিদিন ডাক দেয়: ‘তুমি কি প্রস্তুত?’ আমরা কি সেই ডাকে সাড়া দিতে প্রস্তুত?

কবরের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগে না। একটি নিশ্বাস থেমে গেলেই শেষ ঠিকানায় যাত্রা শুরু।

কবরের নীরবতাই আমাদের জীবনের মূল্যবান শিক্ষা। এটি বলে: ‘জীবনে ন্যায়বিচার করো।

Read More >>  রাতের শহর নিয়ে স্ট্যাটাস

মাটি আমাদের শুরু, মাটিতেই শেষ। কবর শুধু আমাদের অস্তিত্বের চক্র সম্পূর্ণ করে।

যে জীবনের জন্য এত আয়োজন, সেই জীবন কবরের দরজায় এসে শেষ হয়।

কবরের ঠাণ্ডা অন্ধকারেই শুরু হয় আখিরাতের আলোকিত পথ। কিন্তু সে পথ কতজন খুঁজে পায়?

আমাদের দেহ একদিন মাটির সাথে মিশে যাবে, কিন্তু আমাদের কর্মের প্রতিফল বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।

কবর নিয়ে ইসলামিক উক্তি:

কবর প্রতিটি মুসলিমের জন্য একটি চিরন্তন বাস্তবতা, যা আমাদের দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ইসলামে কবর শুধু মাটির নিচে একটি স্থান নয়; এটি আখিরাতের জীবনের সূচনা। কবরের প্রতিটি শিক্ষা আমাদের কর্মের জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে। নীচে কবর নিয়ে ইসলামিক উক্তি দেওয়া হলো:

1. প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। (সূরা আল-ইমরান: ১৮৫)

2. মৃত্যু থেকে কোনো পথ নেই, আর কবরই দুনিয়ার জীবনের শেষ আশ্রয়। (হাদিস)

3. কবর মানুষের জন্য জান্নাতের বাগান অথবা জাহান্নামের গর্ত হবে। (তিরমিজি: ২৪৬০)

4. বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি, যে মৃত্যু এবং কবরের জন্য প্রস্তুতি নেয়। (তিরমিজি: ২৪৫৯)

5. কবরের অন্ধকার দূর করবে সৎকর্ম।

6. কবর জিজ্ঞাসা করবে: তোমার রব কে? তোমার ধর্ম কী? (তিরমিজি)

7. কবর হবে মুমিনদের জন্য বিশ্রামের স্থান এবং পাপীদের জন্য শাস্তির সূচনা।

8. তোমরা কবরস্থানে বেশি বেশি ভ্রমণ করো। কারণ এটি তোমাদের আখিরাতের কথা স্মরণ করায়। (মুসলিম: ৯৭৬)

9. যে কবরের অন্ধকারকে ভয় পায়, সে দুনিয়ায় আল্লাহকে ভয় করুক।

10. কবর সেই স্থান, যেখানে দুনিয়ার সব সম্পদ অর্থহীন হয়ে পড়ে।

11. মৃত্যু হলো দুনিয়ার দরজা বন্ধ করার এবং আখিরাতের দরজা খোলার প্রক্রিয়া।

12. কবরের শান্তি সেই ব্যক্তি পায়, যে আল্লাহর নিকটবর্তী ছিল।

13. তোমরা কবরের জন্য প্রস্তুত হও, কারণ এটাই দুনিয়ার শেষ এবং আখিরাতের শুরু।

14. কবরের এক রাত দুনিয়ার হাজার রাতের চেয়ে কঠিন।

15. সৎকর্ম কবরের সবচেয়ে ভালো সঙ্গী।

16. যে ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করে, কবর তার জন্য ভয়ংকর নয়।

17. কবর প্রতিদিন আহ্বান করে: ‘হে মানুষ! তোমার শেষ ঠিকানায় প্রস্তুত হও।’

Read More >>  ফ্যামিলি সমস্যা নিয়ে স্ট্যাটাস

18. যে ব্যক্তি কবরের জন্য প্রস্তুতি নেয়, সে আখিরাতের চিরন্তন সুখ লাভ করবে।

19. মুমিনদের কবর জান্নাতের একটি খণ্ড হয়ে ওঠে। (মুসলিম: ৫১৫)

20. কবরের জীবন সহজ হবে, যদি দুনিয়ার জীবন আল্লাহর পথে পরিচালিত হয়।

21. যে দুনিয়াতে আল্লাহকে ভুলে যায়, কবর তাকে ভোলাবে না।

22. কবরের অন্ধকার দূর করতে বেশি বেশি নামাজ এবং দান করো।

23. কবরেই মুমিনরা তাদের পরকালীন জীবনের প্রথম সুখ অনুভব করবে।

24. যে ব্যক্তি কবরের জবাবের জন্য প্রস্তুতি নেয়নি, তার জন্য কবর হবে ভয়াবহ শাস্তির স্থান।

25. কবরের ভয় সেই ব্যক্তিকে দূরে রাখে না, যে আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখে।

আরো পড়ুনঃ>>> ইসলামিক স্ট্যাটাস

কবর নিয়ে কোরআনের আয়াত:

1. প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তারপর তোমরা আমার কাছেই প্রত্যাবর্তিত হবে।
(সূরা আনকাবূত, আয়াত: ৫৭)

2. অবশেষে যখন কারও মৃত্যু আসে, সে বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আবার ফেরত পাঠাও, যাতে আমি সেই জীবনে সৎকর্ম করতে পারি যা আমি ছেড়ে এসেছি।
(সূরা মুমিনূন, আয়াত: ৯৯-১০০)

3. তারা কি জানে না, তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে এক মহাদিনের জন্য, যেদিন মানুষ তার প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে?
(সূরা মুতাফফিফীন, আয়াত: ৪-৬)

4. এবং মৃত্যুর যন্ত্রণা সত্যই উপস্থিত হবে। এটি সেই জিনিস, যা থেকে তুমি পালাতে চেয়েছিলে।
(সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৯)

5. যে ব্যক্তি আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হবে, তার জন্য সংকীর্ণ জীবন থাকবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উঠাব।
(সূরা ত্বহা, আয়াত: ১২৪)

6. কবরের মধ্যেই তারা তাদের প্রতিপালকের সামনে ফিরে আসার দিন পর্যন্ত থাকবে।
(সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১০০)

7. তোমরা মৃত্যু থেকে পালাতে চাইলেও তা তোমাদের সামনে আসবেই।
(সূরা জুমু’আ, আয়াত: ৮)

8. তোমরা যা খরচ করেছ বা যা প্রতিজ্ঞা করেছ, তা জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালায় প্রভাব ফেলবে।
(সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১১০)

9. তোমাদের কেউ মৃত্যুবরণ করার পূর্বে আমি তোমাদের প্রতি প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণী পাঠিয়েছি।
(সূরা নিসা, আয়াত: ৭৮)

10. মানুষ কি মনে করে যে তাকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে?
(সূরা কিয়ামাহ, আয়াত: ৩৬)

Read More >>  গন্ধরাজ ফুল নিয়ে ক্যাপশন

কবর নিয়ে হাদিস:

1. কবর জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান বা জাহান্নামের গর্তসমূহের একটি গর্ত।
(তিরমিজি, হাদিস: ২৪৬০)

2. যখন মানুষকে কবরস্থানে রাখা হয়, তখন তার নিকট দুই ফেরেশতা আসেন। তারা তাকে প্রশ্ন করেন: ‘তোমার রব কে?’ ‘তোমার দ্বীন কী?’ ‘তোমার নবী কে?’
(মুসলিম, হাদিস: ২৮৭০)

3. মৃত ব্যক্তির সাথে তার তিনটি জিনিস যায়: তার পরিবার, তার সম্পদ এবং তার আমল। তবে তার পরিবার ও সম্পদ ফিরে আসে, আর আমল থেকে যায়।
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৫১৪)

4. তোমরা কবরের বিষয়ে সচেতন হও। কারণ, কবর পরকালের প্রথম ধাপ।
(তিরমিজি, হাদিস: ২৩০৮)

5. যখন মুমিন বান্দাকে কবরস্থানে রাখা হয়, তখন তার কবরকে প্রশস্ত করা হয় এবং জান্নাতের একটি জানালা তার জন্য খুলে দেওয়া হয়।
(তিরমিজি, হাদিস: ১০৭১)

6. যখন কাফির বা পাপী ব্যক্তি কবরস্থানে যায়, তখন তার কবর সংকুচিত করা হয় এবং আজাবের ফেরেশতারা তার ওপর আঘাত হানে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২৩৮)

7. তোমরা বেশি বেশি কবরের কথা স্মরণ করো, কারণ এটি তোমাদের হৃদয়কে নরম করে এবং পাপ থেকে বিরত রাখে।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪২৫৮)

8. কবরের মধ্যে তিনটি প্রশ্নের উত্তরের ওপর মানুষের পরকাল নির্ভরশীল।
(মুসলিম, হাদিস: ২৮৭০)

9. কবরবাসীর আজাব কমানোর জন্য তাদের জন্য দোয়া করো।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৪৫)

10. তোমরা জান্নাত চাও, আর জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চাও। তাই তোমাদের কবরের জন্য প্রস্তুতি নাও।
(তিরমিজি, হাদিস: ২৪০৯)

উপসংহার:

কবর আমাদের জন্য একটি শিক্ষা, যা দুনিয়ার জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। এগুলো শুধু কথামালা নয়, বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আখিরাতের প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সৎকর্ম করার এবং কবরের অন্ধকার থেকে মুক্তির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক দিন। আমিন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *