বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা । এখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে বাংলায় আলোচনা করা হলো । আশাকরি আপনাদের কাজে আসবে । এই লিখা টা আমরা ফেসবুক থেকে নিয়েছি, তাই যদি লেখায় কোন আপত্তি থাকে । দয়া করে আমাদের জানাবেন । আমরা তা সংশোধন করে দিবো ।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা :

শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের এক মহানায়ক! সংক্ষেপে শেখ মুজিব বা মুজিব বলা হয় তাকে। তিনি জন্মেছিলেন বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায়। তার জন্মের পড়েও কেউ কল্পনা করতে পারেনি এই ছেলে বিশ্ব দরবারে তার নাম উজ্জ্বল করবে তথা বাঙালি জাতির স্বাধীনতার বার্তা নিয়ে এসেছে সে।

১৯২০ সালের মার্চ মাসের ১৭ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন। শেখ মুজিবুর রহমানেরা ছিলেন মোট ছয় ভাই – বোন। ৪ বোন এবং দুই ভাইয়ের মাঝে শেখ মুজিব ছিলেন তৃতীয়। তার পিতা ছিলেন গোপালগঞ্জ দায়রা আদালতের হিসাব রক্ষক (সেরেস্তাদার)। তার বড় বোনের নাম ছিল ফাতেমা বেগম, মেজ বোনের নাম আছিয়া বেগম, সেজ বোন হেলেন এবং ছোট বোনের নাম লাইলী ও তার ছোট ভাইয়ের নাম শেখ আবু নাসের।

শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা জীবন শুরু হয় সাত বছর বয়সে ১৯২৭ সালে। তিনি গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করেন। সেখানে ২ বছর পড়ালেখা করে ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে যান। তবে দূর্ভাগ্যবশত তিনি ১৯৩৪ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পযর্ন্ত তার চোখের সমস্যার কারনে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেন নাই। তার চোখ ঠিক হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় এবং সমস্যা জটিল হওয়ার কারনে এই দীর্ঘ সময় তিনি সম্পুর্ন রুপে লেখাপড়া হতে বিছিন্ন ছিলেন। কিন্তু তাই বলে তিনি পিছিয়ে যাননি বরং পরবর্তীতে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে পড়ালেখা শুরু করেন। এবং সেখান থেকেই তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। এবং  ১৯৪২ সালে এনট্র্যান্স পাশ করে আইন পড়ার জন্য তখনকার নমকরা কলকাতার বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। যার বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ। ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৪৭ সালে। এরপর তিনি পূর্ব পাকিস্তান চলে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ভর্তি হন। সে সময়েই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পুর্ন রুপে যুক্ত হন এবং স্বনামধন্য ছাত্রনেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেন।

শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও নেতৃত্ব প্রদানের বিশেষ গুণাবলি প্রকাশ পায় ১৯৩৯ সালে যখন তিনি গোপালগঞ্জের মিশনারী স্কুলে পড়তেন। তখন একদিন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক তাদের স্কুল পরিদর্শনের জন্য আসেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি দল গঠন করে তার কাছে স্কুলের ছাঁদ মেরামতের জন্য দাবি জানান। এরপরে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে তিনি এক বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন ১৯৪০ সালে। পরবর্তী তিনি ইসলামিয়া কলেজে পড়ালেখা চলাকালীন সময় সক্রিয় ভাবে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তারপরে বঙ্গীয় মুসলিম লীগে যোগ দেন তাদের আন্দোলনের প্রধান বিষয় ছিল পৃথক একটি মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা এবং তিনি ১৯৪৩ সালে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। এখানে তার সাথে হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে পরিচয় হয় এবং সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময় তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং পাকিস্তানের শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেন। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। কিন্তু এরপরেও পাকিস্তান সরকার আওয়ামিলীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায় নাই। যার ফলশ্রুতিতে বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। যার পরবর্তী নাম দেওয়া হয় বাংলাদেশ। মূলত বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারনেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এ কারনে তাকে জাতির পিতার খেতাব প্রদান করা হয়।

তবে দুখের বিষয় হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট তারিখ স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তবে তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তখন জার্মানিতে অবস্থান করার কারনে তারা প্রানে বেঁচে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *