নিচে প্রেমের কবিতা গুলো পড়ে দেখুন । অবশ্যই ভালো লাগবে । এখানে অনেক গুলো সেরা প্রেমের কবিতা পোস্ট করা হয়ছে । প্রেমের কবিতা মানেই হলো অনেক ভালো লাগা আর রোমান্টিকতা ।
বাংলা প্রেমের কবিতা :
গোপনে রয় তবু।
ভাবছি অবিরত।
হৃদয় একটু ঘষলেই।
করতে পারি তাড়া।
অন্য মানুষ নিয়ে।
তুমিই আমার রাধা।
নাম্বার অন্য জনের।
মন বসেনা কাজে।
ღ_ღ_ বিবাহত্তোর প্রেম
আমি যদি ডাইনে চলি
তুমি চলো বামে,
শীতে যখন কাঁপছি আমি
তুমি ভেজো ঘামে।
তোমার সঙ্গে এখন আমার
কিছুই মিলে না,
কিন্তু তোমায় ছাড়া আমি
চলতে পারিনা ।
ব্যর্থ প্রেমের kobita :
১. বুকের কষ্ট গুলো বুকে লুকিয়েই চলে যাব
অনেক দূরে, আমি ফিরবো না আর
এতটা যন্ত্রণা ছিল এই বুকে
সাধ্যি নেই তা বয়ে বেড়াবার।
২. আমি ছিড়ে ফেলেছি ডায়রীর পাতা
যেখানে লিখা ছিলো হাজারো স্বপ্নের কথা
শুধু ছিড়তে পারিনি আমার মনের খাতা
যেখানে জমা আছে অসংখ্য ব্যাথা।
৩. ভেবেছিলাম তুমি এসেছিলে
ধরে রাখবে বলে
সেই তুমিই হারালে আজ চোখের জলে।
৪. আমি না হয় ভালোবেসেই ভুল করেছি
রাতদুপুরে নির্জনতাকে খুন করেছি।
৫. তুমি এক সমুদ্র সুখ নিয়ে
ঘুমাও প্রতি রাতে
আমি না হয় থাকবো জেগে
দুঃখ নিয়ে সাথে।
৬. আমি এখনো একটা মেয়েকে
অসম্ভব ভালোবাসি
আমার এই ভালবাসা তার দেওয়া
কষ্টের চেয়েও বেশি।
৭. বুকের মধ্যে শুধু স্মৃতি আছে অবশেষ,
তোমাতে আমার অসহায় দৃষ্টি অনিমেষ ।
দুঃখ বিনা বাকি নেই সুখের কোন লেশ,
তোমাকে ছাড়া আমিতো হয়ে গেছি শেষ ।
৮. তুমি চলে যাবার পরে
তোমার বিরহে ভিজেছিলাম বৃষ্টিতে
বৃষ্টি জানে কতটা কান্না মিশেছিল তাতে।
৯. যতবার আলো জ্বালাতে যাই
নিভে যায় বারে বারে
আমার জীবনে তোমার আসন
গভীর অন্ধকারে
১০. ব্যর্থ প্রেমের বই
ভাল আর থাকতে দিচ্ছো কই
তোমার বিরহে রই।
১১. সামান্য কারণে অভিমান
তারপর একটি সম্পর্কের ছিন্ন
জিতে গিয়েছিল আমাদের ইগো
তাই দুজনার ঠিকানা ভিন্ন।
১২.
সেই অলিগলির রাস্তায়
তোমার স্মৃতি গুলো এসেছি ফেলে
আবার হাঁটতে গিয়ে দেখি
আমি গিয়েছি পথ ভুলে।
১৩.
আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস
নিঃশব্দে কেঁদে যায়
আজ আমি বেঁচে থেকেও
তোমার জন্য মৃতপ্রায়।
১৪.
ক্ষমা করে দিও
স্মতি ভুলে যেও
প্রতিটি মুহূর্ত কাটে যাতনায়
তুমি সুখে থেকো এই কামনায়।
১৫.
যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো
ফিরে এসো কোন এক বর্ষায়
ভিজব দুজনে দুঃখের জলে
বেঁচে আছি আমি এই আশায়।
১৬.
তোমার বিরহে রোদ কি বৃষ্টি
কিছুই লাগে না ভালো
তুমিহীনা এ হৃদয় আমার
আঁধারের চেয়েও কালো।
১৭.
তুমি কি আমাকে এখনো
আগের মতো ভালোবাসো?
তুমিও কি আমার মতো
কান্নায় ভেঙে হাসো?
১৮
সময়ও প্রশ্ন করে
কেন তুমি আমার নয়
স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেয়
দুঃখ কারে কয়৷
১৯. তোমার দেওয়া দুঃখই
আমার জন্য অনেক
আমি তোমায় ফিরিয়ে দিলাম
লাল গোলাপ কয়েক শ- খানেক।
২০.
এখন তোমাকে নিয়ে দেখা
স্বপ্ন গুলো দুঃখ দেয়।
তোমার দেওয়া ভালোবাসা গুলো
প্রতি রাতে কাঁদায় আমায়।
২১.
আমি তোমারও বিরহে রহিব বিলীন
তোমাতে করিব বাস
দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী
দীর্ঘ বরষ, মাস৷
২২.
তোমার চলে যাওয়া আমার হৃদয়ে
কয়েকশ আকাশ দুঃখ জমা করে
তোমাকে ছাড়া আমার চিরচেনা
রাস্তাগুলো যায় সরে সরে৷
২৩.
চোখ ধাঁধানো অন্ধকারে
ছাড়ব ছাড়ব করে
ছেড়ে দিয়েছিলে তুমি আমার হাত৷
২৪. পারব না আমি তোমার ছাড়া
ঐ নীল আকাশটাকে ভালবাসতে
খুঁজব না আমি তুমি ছাড়া
অন্য কোনো সুখের কিনারা।
২৫.
তুমি হয়তো সুখেই আছো
সবারই মাঝে
কিন্তু আমি তো ভালো নেই
সকাল, সন্ধ্যা- সাজে।
পুরনো প্রেমের কবিতা :
মনে কি পড়ে সেই পুরনো দিনের কথা,
ভালোবেসে আমরা গিয়েছিলাম সেথা ।
কৃষ্ণা চুড়ার ফুলো গুলো ছিলো ফুটে
তুমি মাথা রেখেছিলে এই বুকে ।
বলেছিলে কখনো ভুলে যাবে না
হবে না কোন দিনও পর ।
যাবে না কোথাও, আমায় ছেড়ে
বাধবে না কারো সাথে ঘর ।
হাতে হাত রেখে হতো কত কথা
চোখে চোখ রেখে বুঝতে মনের ব্যাথা,
হেঁটে হেঁটে যেতাম দূর অজানায়
সুখ উকি দিতো মনের জানালায় ।
তোমার কাছে শিখেছি জীবনর মানে
তাই এই জীবন তোমায় শুধু কাছে টানে ।
এই যেন সেদিন হয়েছিলো তোমার সাথে দেখা,
মনের মাঝে বাজে সেই দিনের কথা ।
আমি তোমায় ভুলিনি তো আজও
পারবো না কোন দিন ভুলতে,
তুমিও কি এখনো আমায় নিয়ে ভালো
পাওকি আমার মনের কথা শুনতে ?
প্রথম প্রেমের কবিতা :
১. প্রথম প্রেম :
দেখেছিলেম যেদিন তোমায় অঝোর আলোর পরশে,
থাকতে আর পারি নি সেদিন একলা চুপটি বসে।
কী সন্দর সেজেছিলে!- যেন মায়া ভরা সেই মুখ,
ওই বদন এই লুকিয়ে আছে আমার সকল সুখ।
চুপি চুপি পায়ে হাঁটছিলাম তোমার আঁচল ধরে,
কি-বা শঙ্কায় উঠলে মেতে, ফুল গুলো গেল পড়ে।
সেই ফুল তো লাগিয়ে ছিলেম তোমার কানের পিঠে,
সেই ফুল গুলো শুধু ই স্মৃতি, রুপ নিয়েছে হয়তো কীটে।
মিছে কথা আর বলি না আমি, সত্যি বলছি ভারি,
সেই মিথ্যার আঁচড়ে ই তো করেছিলে তুমি আড়ি।
সেই থেকে আর পাই নে খুঁজে তোমায় আমি কোথাও,
কেন আমায় ছেড়ে গেলে ওগো, হয়ে গেলে তুমি উধাও?
২. অদেখা সত্য:
আমি তো জানতাম, তুমি আমার কখনো হবে না আর,
তবু ও এক অদৃশ্য টান কাছে ডাকতো বারংবার।
আমি ও যেতাম ছুট্টে চলে, সকল কার্য ফেলে,
তুমি ও দেখাতে অবহেলা, দিতে তাড়িয়ে হেসে-খেলে।
আমি তো জানতাম, তুমি যে হবে অন্য কারোর প্রিয়া,
সত্য জেনে ও তোমাকে ই কেন মন চাইতো?- বল হিয়া!
যেদিন তোমায় দেখেছিলেম অন্য কারোর সাথে,
তুমি ও ছিলে হাসি-খুশি, হাত রেখেছিলে তার হাতে।
সত্যি বলছি, সেদিনের পর কষ্ট হয়েছে অনেক,
সেই কষ্ট কে বুঝবে বলো?- তবু বুঝিয়েছি প্রতি জনেক।
তোমার পাশের কলঙ্কিত “আমি” টা না হয় মুছে যাক,
তোমায় প্রণয় অন্যের সাথে- অদেখা সত্য হয়ে ই থাক!
নিশি রাতের প্রেমের কবিতা :
প্রিয়ার প্রেম
কাওছার আহাম্মেদ অন্তর
চাঁদের আলোতে যত দেখি ঐ মুখ,
তবু না ইচ্ছে ফুরায়।
তোমার বুকে মাথা রাখিয়া,
আমি তোমাতে হারাই।
ওহে মোর প্রিয়া বাতাসে ভাসিয়া
কেনো আসোনা মোর কাছে?
তুমি কি জানো না তোমার জন্য
এই অভাগা একটু হাসে?
দিনের পরে দিন চলে যায়,
দেখা নাহি মেলে তোমার।
অমাবস্যার চাঁদের দেখা পাওয়া
লজ্জায় হয়ে যায় অবতার।
আমি অভাগা কালো মেঘে ঢাকা
আকাশ দেখিয়া হয়েছি বড়।
তুমি কেন প্রিয়া মোরে কাপুরুষ
ভাবিয়া হাসিয়া টলিয়া পড়ো?
হতেই পারে আমি তোমার কাছে
নয় অবতার নয় ভাঁড়।
তবু সত্যি বলছি প্রিয়া, তোমার প্রেমেতে,
জীবন হয়েছে স্রোতধার।
বন্ধু তুমি
কাওছার আহাম্মেদ অন্তর
বন্ধু তুমি, শত্রু তুমি,
তুমি খেলার সাথী।
তোমায় নিয়ে দেখতে যাবো
চিড়িয়াখানার হাতি।
রাগ করেনা বন্ধু আমার,
দুষ্টামি টা করলাম।
মনে আছে কী? ছোট বেলাতে
কত একসাথে খেলতাম।
বড় হয়ে গেছো বন্ধু তুমি,
শরীরে তোমার যৌবন।
ছোট্ট বেলার বন্ধু আমার,
হবে কী আমার আপন?
মনে আছে তোমার?
খেলতাম একসাথে,
পুতুল বিয়ের খেলা।
সেই খেলা কি করবে আবার?
পুতুল হবো আমরা!
লজ্জা পেয়ে বন্ধু আমার,
মুখ লুকালো হাতে।
সম্মতি দিয়ে বলল, সুজন,
আছি তোমার সাথে।
খেলবো আবার পুতুল বিয়ে,
সাজব আমরা পুতুল।
চাঁদনী রাতে কাঁধে মাথা রেখে,
হবো ভালোবাসায় আকুল।
বাসবো তোমাকে ভালো, ওগো প্রিয়তমা,
বাসবো তোমাকে ভালো।
ছোট্ট বেলার বন্ধু আমার,
ভালোবেসে করবো জীবন আলো।
প্রেমিকার ফুল
কাওছার আহাম্মেদ অন্তর
চাঁদনী রাতে নদীর তীরে
ভাবছে দুঃখু মিয়া,
এই জগতে কার ভালোবাসায়
ভরবে রে তার হিয়া।
আশায় আশায় কাটছে না দিন,
ক্লান্ত সে জে ভিসন।
প্রেমের নেশায় ক্লান্ত দুঃখুর
চোখ আটকায় কীরণ।
এই কীরণ ভাই সেই কীরণ নয়,
নয় এ চাঁদের কীরণ।
ভিষন দশ্যি ছুনবুনে মেয়ে,
এ জে সেই কীরণ।
গ্রামের দশ্যি সুন্দরী মেয়ে
দুঃখুর দিকেই আসছে।
এতো রাতে এটা কীরণ?
নাকী ভুত প্রেত আসছে।
না না, এ ভুত নয়,
নয় এ কোনো প্রেত।
এ তো দেখছি দিব্যি কীরণ
মাড়িয়ে আসছে খেত।
হাতে ফুল আর ভালোবাসা নিয়ে কীরণ,
দুঃখু মিয়ার দিকে ছুঁড়লো।
যাক, অবশেষে দুঃখুর নসিবে
প্রেমিকার ফুল জুটলো।
আধুনিক প্রেমের কবিতা :
তোমার মোহে
নীল শাড়িতে সাজবে রূপা, হলুদ হিমু আমি
আনবো কিনে রেশমী চুড়ি হয়ে তোমার প্রেমী,
হুডফেলা রিকশা চড়ে ঘুরবো দুজন খুব
এলোচুলের মোহতে পড়ে তোমাতে দেবো ডুব।
নিজের হাতে পড়িয়ে দেবো পায়েল তোমার পায়ে
কাশফুলেরা কাটবে বিলি তোমার কোমল গায়ে,
বৃষ্টি এলে ভিজবো দুজন, পড়বো তোমার মোহে
চিরকুটের আদান-প্রদান নিত্যনতুন বইয়ে!
টং এর চায়ে উষ্ণ হবো, দৃষ্টিতে হাতছানি
ছয় তারেতে উঠবে সুর, তোমায় ঠিকই জানি,
চোখের পাতায় ভিড় করেছে, স্বপ্ন আরও কতো-
তোমার মোহে বন্দি আমি, তোমার খুশির ব্রত।
তোমার জন্যে
দূর পাহাড়ে ঘুরতে যাবো প্রিয়া তোমার সাথে
জুম ঘরেতে বসে দুজন দেখবো আকাশ রাতে,
চলার পথে ক্লান্ত হয়ে তাকাবে আমার পানে
এক পলকেই বুঝে নেবো চোখের ভাষার মানে।
আকবো আমি চিত্র তোমার মোনালিসার মতো
তোমার পায়ে লুটাবো আমি- প্রেম আছে যতো
তোমার জন্যে শব্দজালের মোহ হবে লেখা
প্রকৃতির সৌন্দর্য সব তোমায় নিয়েই দেখা।
তোমার জন্যে লিখবো গান, অনন্য সব সুর
ভুল করেও তোমায় আমি দেবোনা হতে দূর,
আরতিতে তুমিই দেবী, অঞ্জলিতেও তুমি
তোমার মাঝেই পূর্ণ হবো, অপূর্ন এই আমি।
চায়ের কাপে ভালোবাসা
চায়ের কাপে উঠবে ঝড়, তর্ক হবে খুব-
দিনের শেষে শ্রান্তি পেতে তোমার মাঝেই ডুব
রাজনীতির আলাপ কিংবা খেলার মাঠের লড়াই
তোমার মতো প্রেমী পেয়ে করতে পারি বড়াই।
সত্যজিৎ আর হুমায়ুনে যদিও বাধে গোল
দাবার প্রতি চালের সাথে পাল্টে প্রেমের ভোল।
ভিঞ্চি থেকে জয়নুল পর্যন্ত বাদ যাবে না কেউ
হৃদয়েতে চ্যাপলিন বসে- প্রনয়ে শিল্পের ঢেউ।
রুদ্র আর রবি ঠাকুরের বেজায় সদ্ভাব
আমাদের জুটি যেন তাদেরই প্রভাব;
বাচ্চুর “সেই তুমি”, জেমসের “কবিতা”
আমাদের প্রেম ঠিক শরৎ এর পরিনীতা।
কৃষ্ণ-রাধার প্রেমের মতো
তোমার চোখে আমায় দেখি, স্বপ্নসুরা পান
হাতের সাথে হাত ছুয়েছে, সঙ্গীতেরই তান;
কুঞ্জবনের রাসলীলাতে যেন কৃষ্ণ-রাধা
যমুনাতে ভেসে যাবে পথের যতো বাধা।
পূর্নিমাতে চন্দ্রবিলাস – সবার অজান্তে
প্রেমের ভেলায় খুনসুটিতে মাতবো একান্তে,
বৃষ্টিবিলাস-সূর্যস্নান বাদ যাবে না কিছু
মাতাল হাওয়ার মতো আমি ছুটবো তোমার পিছু।
রংধনুর সাত রঙেতে রাঙাবো তোমায়
অহর্নিশি থাকবে তুমি মোর ভাবনায়,
দেবদাসের পারো কিংবা হিমু-রূপা নয়
রাধিকার কাহ্নাই হয়ে বিশ্ব করবো জয়।
আছে আমার হৃদয় আছে ভরে
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আছে আমার হৃদয় আছে ভরে,
এখন তুমি যা খুশি তাই করো।
এমনি যদি বিরাজ’ অন্তরে
বাহির হতে সকলই মোর হরো।
সব পিপাসার যেথায় অবসান
সেথায় যদি পূর্ণ করো প্রাণ,
তাহার পরে মরুপথের মাঝে
উঠে রৌদ্র উঠুক খরতর।
এই যে খেলা খেলছ কত ছলে
এই খেলা তো আমি ভালবাসি।
এক দিকেতে ভাসাও আঁখিজলে,
আরেক দিকে জাগিয়ে তোল’ হাসি।
যখন ভাবি সব খোয়ালাম বুঝি
গভীর করে পাই তাহারে খুঁজি,
কোলের থেকে যখন ফেল’ দূরে
বুকের মাঝে আবার তুলে ধর’।
অনন্ত প্রেম
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার–
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলন কথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চির-দিবসের প্রেম অবসান লভিয়াছে,
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ, নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে সকল প্রেমের স্মৃতি–
সকল কালের সকল কবির গীতি।
তুমিই শুধু তুমি
– সৈয়দ শামসুল হক
তোমার দেহে লতিয়ে ওঠা ঘন সবুজ শাড়ি।
কপালে ওই টকটকে লাল টিপ।
আমি কি আর তোমাকে ছেড়ে
কোথাও যেতে পারি?
তুমি আমার পতাকা, আমার কৃষির বদ্বীপ।
করতলের স্বপ্ন-আমন ধানের গন্ধ তুমি
তুমি আমার চিত্রকলার তুলি।
পদ্য লেখার ছন্দ তুমি−সকল শব্দভুমি।
সন্তানের মুখে প্রথম বুলি।
বুকে তোমার দুধের নদী সংখ্যা তেরো শত।
পাহাড় থেকে সমতলে যে নামি−
নতুন চরের মতো তোমার চিবুক জাগ্রত−
তুমি আমার, প্রেমে তোমার আমি।
এমন তুমি রেখেছ ঘিরে−এমন করে সব−
যেদিকে যাই−তুমিই শুধু−তুমি!
অন্ধকারেও নিঃশ্বাসে পাই তোমার অনুভব,
ভোরের প্রথম আলোতেও তো তুমি!
আনন্দ
– সুকুমার রায়
যে আনন্দ ফুলের বাসে,
যে আনন্দ পাখির গানে,
যে আনন্দ অরুণ আলোয়,
যে আনন্দ শিশুর প্রাণে,
যে আনন্দ বাতাস বহে,
যে আনন্দ সাগরজলে,
যে আনন্দ ধুলির কণায়,
যে আনন্দ তৃণের দলে,
যে আনন্দ আকাশ ভরা,
যে আনন্দ তারায় তারায়,
যে আনন্দ সকল সুখে,
যে আনন্দ রক্তধারায়
সে আনন্দ মধুর হয়ে
তোমার প্রাণে পড়ুক ঝরি,
সে আনন্দ আলোর মত
থাকুক তব জীবন ভরি।
আকাশলীনা
– জীবনানন্দ দাশ
সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়োনাকো তুমি,
বোলোনাকো কথা অই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা :
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;
ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে – আরও দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর।
কী কথা তাহার সাথে? – তার সাথে!
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ :
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।
সুরঞ্জনা,
তোমার হৃদয় আজ ঘাস :
বাতাসের ওপারে বাতাস –
আকাশের ওপারে আকাশ।
ভালবাসার কবিতা আমার মন ছুঁয়ে যায়। কবিতা আবৃত্তি করতে আমার খুব ভালো লাগে।
ভালোবাসার মানুষ গুলো খুব নিষ্ঠুর