ফাল্গুনের কবিতা

ফাল্গুনের ৪ টি সেরা কবিতা নিয়ে আমাদের আজকের পোস্ট । কবিতা গুলো লিখেছেন “সাকিসেফ উম্মে ফাতেমা” আশাকরি কবিতা গুলো পড়ে অনেক মজা পাবেন । আমার কাছে পড়ে ভালো লেগেছে । তাই আপনারাও পড়ে দেখুন একবার ।

ফাল্গুনের কবিতা

ফাল্গুনের কবিতা

উদাসী ফাগুন

রুক্ষ শীতের শূন্যতা শেষ- প্রান ফিরেছে ধরায়,
অনুভূতির রঙ্গিন ফেরি সর্বাঙ্গে জড়ায়।
গুনগুনিয়ে ভ্রমর চলে, মৌমাছিও আছে,
সরিষা ক্ষেতে মধু পাবে, মুকুল আমের গাছে।
বউ কথা কও ডাকছে পাখি, কোকিল ধরে গান।
হিয়ায় আমার বিধলো বুঝি, মদন দেবের বান!

প্রানের সখার প্রতিক্ষাতে প্রহর বয়ে যায়
মন যে আমার হয় উদাসী; কি করিবো হায়!
কাজল কালো নেত্রযুগল, ওষ্ঠে রাখি হাসি
ভুলেছে সে কি শত প্রহর অপেক্ষাতে আছি?
কালচক্রের প্রহর বয়; চক্ষু আসে মুদে
প্রনয় বুঝি আর হোল না; ডুবি যেন ক্লেদে!

বাতায়নে বসে আছি সুর বাধি যে মনে,
সখার আশায় চেয়ে থাকি কুঞ্জ বনের পানে।
তানপুরাতে আঙ্গুল চলে সুরের ঐকতান,
দক্ষিণ হাওয়া উদাস করে, বেসুরো সব গান।

ফাগুন আমায় বিভোর করে, হারায় নিজেকে
শূন্য হিয়ার আড়ালে তবু হাসি জড়াই মুখে,
আক্ষেপ আমি এড়াতে নারি; দুপুর বিষন্ন
ফাগুন মানেই সুখ শুধু নয়- নির্জীব অপরাহ্ন।

আরো আছেঃ >> বসন্তের কবিতা

 

ফাগুনের প্রেম

বসন্ত যে এসে গেল, ফাগুনে মাতবে প্রিয়?
টিএসসিতে তুমি গেল, আমায় সঙ্গে নিও।
পড়ে এসো পাঞ্জাবিটা- হলুদ কিংবা নীল
শাড়ি আমি পড়বো রেখে তোমার সাথে মিল।

কিনে দিও গজরা ফুলের ; লাগিয়ে দিও চুলে
বই মেলাতেও হবে যেতে- যেওনা যেন ভুলে।
বিকেল বেলা বন্ধুরা সব আসবে পুকুর পাড়ে,
তখন তুমি গান ধরো এক, আমায় উদাস করে।

হাঁটতে হাঁটতে সাঝের বেলায় উদ্যানেতে যেও
লেকের জলে প্রতিবিম্ব ; আপন করে নিও।
চোখের তারায় ডুববো আমি, ঠাই পাবো না জানি
এলোমেলো ছন্দ সাজাও- মধুর প্রেমের বানি।

একটা দিন ইচ্ছে মতো ঘুরবো মনে রেখো
যান্ত্রিকতাও মুখ ফেরাবে- পাবেনা ছুতে দেখো
দুঃখগুলো পেছনে ফেলে পা বাড়াবো আগে-
আবার যেন ভুল করোনা; বেয়াড়া কিছু রাগে।

ফাগুন মানেই প্রেমের প্রতীক- নতুন করে শুরু
তোমার ছোঁয়ায় শ্রান্তি মেলে, হৃদকম্প দুরুদুরু
প্রেমের নামে নতুন করে হাতটা ধরো আবার
তুমি যে হও প্রানের সখা, কোথায় বলো যাবার

 

বসন্তের কবিতা

বসন্তবরণ

পলাশ শিমুল জোড় বেধেছে-
ফাগুন এলো ধরায়,
বউ কথা কও গান ধরেছে,
করছে সুরের বড়ায়।

হলুদ হিমুর বেশ ছেলেদের
নীলের রূপা নয়
রঙ বেরঙের বেশ রমনীর
ফুলও শোভা পাই।

শাড়ি সাজে বাঙালিয়ানা
পাঞ্জাবিতেও তাই,
ফাগুন মানেই প্রেমের যুগল
দারুন লাগে ভাই।

সাঝের বেলায় কবিতা চলে
গানের আসর রাতে,
ছেলেবুড়ো সবাই যেন
আনন্দতে মাতে।

উৎসব যেন গ্রাম নগরে
তবুও কোথায় যেন ছেদ,
শূন্য শীতের বিদায় বেলায়
মন খারাপের জেদ।

বসন্তের ধারা

প্রকৃতিতে সুর উঠেছে, ফাগুন এলো দ্বারে;
বরতে হবে বসন্তরে রাঙা পুষ্প হারে।
রাজপথ ছেয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার লালে,
চতুর্দিকে সুবাস ছড়ায় হরেক রকম ফুলে।

রুদ্র-পলাশ, স্বর্ন-শিমুল, পলাক-জুই এর সাথে;
রক্ত-কাঞ্চন, ক্যামেলিয়া, ইউক্যালিপটাসও আছে।
মহুয়া, অশোক, কুসুম, কুরচি সুগন্ধ ছড়ায়;
দেবদারু আর গামারি ফুলেও মুগ্ধতা মেলায়।

বৃক্ষ শাখে নব বৃন্ত- ঝরা পাতার শেষ;
গাছের শাখে রাঙ্গা পাতা দেখতে লাগে বেশ।
কাচা বরই ভর্তা খাওয়া ধনিয়া পাতার সাথে
দিনের বেলায় চড়ুইভাতি, গানের আসর রাতে।

কবিরা সব কাব্যে মাতে; চলে হাতের কারুকাজ,
ফাগুন মানেই অন্যরকম অকৃত্রিম এক সাজ।
আল্পনাতে চিত্র ফোটে- বসন্ত বরন
ইচ্ছে মতো তুলির আচড়; মেলেনা বারন।

নির্মলেন্দুর কবিতা কিংবা নজরুলের গান-
রবি ঠাকুরের বন্দনাতেও ফাগুন যে পায় প্রান।
ঋতুর রাজন রাজ যে করে মনের আঙ্গিনায়
বসন্তকেই কন্ঠে ধরি মনের সীমানায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *