কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি ভালো রাখার উপায় গুলো জেনে রাখা জরুরী । কিডনি আমাদের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি বিকল হয়ে গেলে মানুষের বেচে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে যায়। কিডনির প্রধান কাজ হলো আমাদের দেহের বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ এবং রক্তের ক্ষারীয় পদার্থ প্রস্রাবের সাথে বের করে দেওয়া। তবে বিভিন্ন কারনে এই গুরুত্বপূর্ণ কিডনির সমস্যা এবং রোগ হয়ে থাকে। এসকল সমস্যা হতে মুক্তি পেতে হলে কিডনির যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তবে এজন্য কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায় এবং ভালো রাখার উপায় আমাদের সকলের জানা দরকার। রসূনের উপকারিতা

কিডনি ভালো রাখার ৭ টি উপায়

১: প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন –
পানির অপর নাম জীবন। কারন পানি আমাদের দেহকে সচল রাখতে সহয়তা করে। একটি মানুষ কোন প্রকার খাদ্য না খেয়েই ১৫-১৭ দিন বাঁচতে পাড়লেও পানি ছাড়া ২ থেকে ৭ দিনের বেশি কোনভাবেই বেঁচে থাকতে পারে না। তবে কিডনির জন্য এই পানির প্রয়োজনীয়তা একটু বেশিই। কারন পানির পান করার ফলেই আমাদের দেহের রক্ত সঠিক ভাবে প্রবাহিত হয়। রক্তে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান পানি পান করার মাধ্যমেই শরীর থেকে প্রস্রাব হিসেবে বের হয়ে যায়। তবে রক্তে ছাড়াও আমাদের দেহে প্রতি মূহূর্তে প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য এবং ক্ষারিয় উপাদান তৈরি হয়। আর এই ক্ষতিকর পদার্থ বের করার প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে সম্পন্ন করে আমাদের কিডনি৷ পানি যদি কম পান করার হয় তাহলে কিডনির এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রচুর বেগ পেতে হয়। ফলশ্রুতিতে আস্তে আস্তে কিডনির কার্যক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকে। এবং এর সর্বশেষ পরিনতি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। এ কারনেই প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।কিডনি ভালো রাখার উপায়

২: ঔষধ সেবনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে – জীবন বাঁচাতে ঔষধের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে এই ঔষধ-ই হতে পারে জীবন ধ্বংসকারী মরন অস্ত্র। কারন প্রায় সকল ঔষধ-ই কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তবে ব্যাথার ঔষধ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ কারনে আমাদের ব্যাথার সমস্যা সহ বিভিন্ন সমস্যায় সমাধান ঔষধ সেবনে সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ সমস্যায় যদি ঔষধ সেবন ছাড়াই ভালো হয় তাহলে ঔষধ সেবন হতে বিরত থাকতে হবে। এবং “ডাইক্লোফেনাক” জাতীয় ঔষধ যতদুর সম্ভব না খেয়ে থাকা যায়। সাধারণ সমস্যায় বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে যেমন ভেষজ ঔষধ সেবন করা। এগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর নয়।

৩: ভিটামিন সি গ্রহনে সচেতনতা – ‘ভিটামিন-সি’ আমাদের দেহে যেসব ভিটামিনের চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো ভিটামিন-সি। এ কারনে আমাদের নিয়মিত এটি গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সচেতনতার দরকার রয়েছে, কারন অতিরিক্ত ভিটামিন সি কিডনির জন্য মোটেও ভালো নয়। এ কারনে কিডনিকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহন হতে বিরত থাকুন।

৪: অতিরিক্ত প্রানিজ প্রোটিন কিডনির জন্য ক্ষতিকর – প্রানিজ আমিষ মানুষের কিডনির জন্য ক্ষতিকর। এ কারনে প্রতিদিনের খারার তালিকায় প্রানিজ আমিষ যেমন গরুর, খাসির বা মুরগির মাংসের পরিবর্তে আমিষের উৎস হিসেবে মাছ এবং ডাল রাখতে পারেন। এটি শরিরের প্রোটিনের অভাব পূরনের পাশাপাশি কিডনি জনিত সমস্যা হতে মুক্ত রাখবে।

৫: লবন খাওয়ার পরিমাণ কমান- খাবারে স্বাদ যুক্ত করার জন্য লবনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এর মাধ্যমে দেহের আয়োডিনের ঘাটতি পূরন করে। তবে একটি মানুষের দৈনিক এক চামচের বেশি লবন খাওয়ার দরকার পড়ে না। যা প্রতিদিনের রান্নায় যে লবন ব্যাবহার করা হয় তার মাধ্যমেই পূরন হয়। কিন্তু অনেকেই খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন খেয়ে থাকেন। যা কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে। যাদের এই অভ্যাস রয়েছে তা আজই পরিবর্তন করতে হবে।

৬: ডায়বেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে- বর্তমান সময় ডায়বেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ একটি কমন সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। এই দুই সমস্যা হতে মুক্ত প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে দাড়িয়েছে। তবে কিডনির সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে এই দুইটি বিষয় হতে দেহকে মুক্ত রাখতে হবে। এবং যাদের ডায়বেটিস রয়েছে তাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এবং রক্তচাপ ৮০-১৩০ এর বেশি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৭: ধূমপান, মদ্যপান এবং কোল্ড ড্রিংস হতে দূরে থাকুন- ধূমপান আমাদের ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর এবং মদ্যপান এই দুইটি ক্যান্সারের মত জটিল রোগের কারন। তবে এগুলো আমাদের কিডনির সমস্যা সৃষ্টিরও কারন হতে পারে। একই ভাবে কোল্ড ড্রিংকসও আমাদের কিডনির ক্ষতি করে। এ কারনে এই তিনটি জিনিস এড়িয়ে চলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *