স্বাধীনতা দিবস রচনা

স্বাধীনতা দিবস রচনা
অথবা,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
অথবা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

ভূমিকা : পৃথিবীর প্রতিটি স্বাধীন জাতির অভ্যুদয়ের বা স্বাধীনতা অর্জনের একটি ইতিহাস আছে। স্বাধীনতা এমনি এমনি অর্জন করা যায় না। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি স্বাধীন জাতি তাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছে রক্তের বিনিময়ে। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ তারিখে পালিত হয়। তবে এ স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে রয়েছে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাস। দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী রক্ত ক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। এবং এই দিনটিকে আমরা স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করি। এবং এই স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মুক্ত হয় বিদেশি শাসন-শােষণ, নির্যাতন-নিপীড়নের হাত থেকে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঙালি জাতির প্রেরণা হয়ে থাকবে চিরদিন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি জাতি থাকবে, ততদিন এ চেতনাই হবে বাঙালি জাতির সার্বিক উন্নতির মূলমন্ত্র। এবং যুগের পর যুগ পালিত হবে স্বাধীনতা দিবস!

স্বাধীনতা সংগ্রাম বা মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি : বাংলাদেশের ইতিহাস-বিদেশিদের শাসন, শােষণের ইতিহাস। বলা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই এদেশ শাসন করে আসছে বিদেশিরা। সেই শশাঙ্ক থেকে পাল-সেনদের কথা বাদ দিয়ে মুঘল, ইংরেজ বা পাকিস্তানি যাদের কথাই বলি না কেন, তারা কেউ এদেশের সন্তান ছিল না। তারা সবাই ছির বিদেশি-বিভাষী। তারা এদেশে এসেছে নানা কারণে। কিন্তু এসে ছলে-বলে-কলে কৌশলে দখল করে নিয়েছে এদেশের শাসন ক্ষমতা। ইংরেজরা এদেশে আসে বাণিজ্য করতে। কিন্তু ধূর্ত ইংরেজরা অচিরেই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন পলাশীর আম্রকাননে মীরজাফরের সহায়তায় নবাব সিরাজ-উদদৌলাকে পরাজিত করে ক্ষমতা দখল করে নেয়। আর সেদিনই অস্তমিত হয় বাংলাদেশের শেষ স্বাধীনতার সূর্য। তারপর প্রায় দু’শ’ বছর ইংরেজরা এদেশের মানুষের ওপর চালায় শাসন-শােষণ, নির্যাতনের স্টিম রােলার। তাঁদের সময় থেকেই অনেক বাঙালি বীর সন্তান বিভিন্ন সময়ে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে।

যেমন: ফকির বিদ্রোহের নেতা মজনু শাহ, বারাসাত বিদ্রোহের নেতা তিতুমীর, ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তুল্লাহ এবং সর্বশেষ ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহকারী সৈনিকগণ। তাঁদের চেতনা ধারণ করেই উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় বাঙালিরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে নানা আন্দোলন ও সংগ্রাম করে ১৯৪৭ সালে অর্জন করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পাকিস্তান। কিন্তু ইংরেজরা বাঙালিদের যেভাবে শাসন শােষণ করত, পশ্চিম পাকিস্তানিরাও বাঙালিদের ওপর ঠিক সেভাবেই শাসন-শােষণ চালাতে লাগল । পূর্ব-বাংলার মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের খেয়াল খুশির পুতুল, আর শােষণ-বঞ্চনার পাত্র হয়ে গেল। এমনকি ভাষা আন্দোলনের চেতনা ধরেই ‘৫৪-তে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে জয়, ৬৯- এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এককভাবে বিজয় অর্জিত হয়। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক চক্র ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে নানান টালবাহানা শুরু করে। সময় ক্ষেপণ করে ২৫শে মার্চ রাতের আধারে এদেশের ঘুমন্ত মানুষের ওপর বর্বর হামলা চালায় তারা; উদ্দেশ্য এদেশের অধিকার সচেতন মানুষকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেওয়া। কিন্তু বাঙালি তাে হার মানা জাতি নয় । কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায়,

Read More  নৌকা ভ্রমন রচনা

“সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়;
জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নােয়াবার নয়।”

বাঙালিরা জেগে ওঠে দুর্বার সংগ্রামে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা যুদ্ধ। তারা বাঙালির প্রাণ মুখের ভাষা ও কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করল। আর তখনই বীরের জাতি বাঙালি গা-ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠল, সংঘটিত হলাে ভাষা আন্দোলন। আর তারপর থেকেই জাগ্রত হলাে তাদের মুক্তির চেতনা।

Read more:>>> বিজয় দিবস রচনা

ভাষা আন্দোলন ও অন্যান্য আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের বা স্বাধীনতা অর্জনের চেতনা : ভাষা আন্দোলন এদেশের মুক্তিসংগ্রামের মা। এ আন্দোলনই জাতিকে সর্ব প্রথম ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ও অধিকার আদায়ের মূলমন্ত্র দীক্ষা দেয়। ১৯৪৮ সালে ভাষা কেন্দ্রিক এ আন্দোলনের সূত্রপাত এবং ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক, শফিউরসহ আরাে অনেকের রক্তের বিনিময়ে, প্রাণের বিনিময়ে ফলপ্রসূ হয় ভাষা আন্দোলন। তারপর একের পর এক আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যায় স্বাধীনতার পথে।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু ও স্বাধীনতা ঘােষণা : বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন চিরতরে মুছে দেওয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালাে রাতে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ শুরু করে পশ্চিম পাকিস্তানের ইয়াহিয়া, টিক্কা খান। রাতের অন্ধকারে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত বাহিনীকে তারা লেলিয়ে দেয় ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালিদের নিধন করতে। হিংস্র পাক-সেনাবাহিনী ঢাকার পিল খানা, ইপিআর হেডকোয়ার্টার, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রনায়ক শেখ মুজিবকে বন্দি করে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানে। কিন্তু যাওয়ার আগে তিনি স্বাধীনতার ঘােষণা দিয়ে যান। তাছাড়া ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভায় তিনি জোরালাে ভাবে ঘােষণা করেন- “এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এরপর এ ঘােষণার সাথে সাথে সারা দেশে শুরু হয় মুক্তির সংগ্রাম।

মুক্তিবাহিনী ও মুজিবনগর সরকার গঠন : স্বাধীনতা সংগ্রামের কাক্ষিত বিজয় অর্জনের লক্ষ্যে জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্বে সাবেক ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ, আনসার, ছাত্র-যুবক, কৃষক-মজুর, ব্যবসায়ী শ্রমিকসহ সব শ্রেণির সব সম্প্রদায়ের মানুষ। নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। তারা দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে ভারতের সীমান্বর্তী অঞ্চলগুলােতে অবস্থান ও নামমাত্র ট্রেনিং নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুসৈন্যের ওপর। অন্যদিকে ১০ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং ১৭ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকার শপথ গ্রহণ করে। সরকারের দপ্তরের কাঠামাে ছিল নিম্নরূপ :

Read More  পদ্মা সেতু রচনা

★রাষ্ট্রপতি- শেখ মুজিবুর রহমান
★উপরাষ্ট্রপতি- সৈয়দ নজরুল ইসলাম (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি)
★প্রধানমন্ত্রী- তাজউদ্দিন আহমদ
★পররাষ্ট্র মন্ত্রী- খন্দকার মােশতাক আহমদ
★অর্থমন্ত্রী- ক্যাপ্টেন মনসুর আলী
★স্বরাষ্ট্র ও পুনর্বাসন- এ এইচ এম কামারুজ্জামান
★মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক- জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী।

১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল কুষ্টিয়ার মেহেরপুর জেলার ভবের পাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বহু দেশি-বিদেশি সাংবাদিকের সামনে বিপ্লবী সরকার শপথ গ্রহণ করেন। তাছাড়া দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গঠন করা হয় একটি উপদেষ্টা কমিটি।

এবং এর মাধ্যমেই চুড়ান্ত ভাবে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রতী হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দেশের সর্বস্তরের জনগণ। কৃষক- শ্রমিক ধনী- গরীব সর্ব স্তরের মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে। যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এবং এই সংগ্রামে শহীদ হওয়ার মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ভালাবাসা এবং স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দ উৎসব পালন করার জন্য ২৬ মার্চ তারিখকে বেছে নেওয়া হয়। কারন এই দিনটিতেই বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য একটি ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

মুক্তিযুদ্ধ ভারতের সহযােগিতা ও চূড়ান্ত বিজয় : ২৬ মার্চ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর দীর্ঘ নয় মাসব্যাপী বাংলাদেশের জেগে ওঠা মানুষ জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে হায়েনা পশ্চিম পাকিস্তানি দের সাথে। তারা সামান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে কাবু করে পাক সেনাদের। তাদের নানা ভাবে সাহায্য- সহযােগিতা করে ভারত। শেষে প্রত্যক্ষ ভাবেই তারা মুক্তি বাহিনীর সাথে যুদ্ধে যােগ দেয়। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়ে তােলা হয় যৌথ বাহিনী। এ যৌথ বাহিনীর আক্রমণে পর্যদস্ত হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ৯৩ হাজার সৈন্যসহ পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল নিয়াজি মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। অবসান হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের। বাংলার আকাশে আবার উদিত হয় লাল-টকটকে রক্তিম স্বাধীনতার সূর্য। বাঙালিরা পায় তাদের স্বাধীন দেশ, স্বাধীন ভাষা, স্বাধীন লাল-সবুজের পতাকা এবং চির কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

Read More  সময়ের মূল্য রচনা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং স্বাধীনতা দিবস : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের মনের অত্যন্ত গভীরে প্রােথিত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সদ্যগঠিত সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম এক বেতার ভাষণে বলেছিলেন, “আমরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেসব শহীদের কথা, সেসব অসীম সাহসী বীর যােদ্ধার কথা, যাঁরা তাঁদের আত্ম বলিদানের জন্য অমর হয়েছেন, তারাই আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন চিরকাল।”

এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনেে জন্য এবং আমরা তাদের আত্মবলিদানের কথা যেন ভূলে না যাই এ কারনেই মূলত স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। এটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি অম্ল মধুর দিন। কারন একদিকে যেমন লাখো মানুষের স্বজন হারানোর বেদনা ঠিক তেমন স্বাধীনতার মধুর স্বাদ গ্রহন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে। পতাকা উত্তোলন, প্যারেড, বিভিন্ন দেশাত্মবোধক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয় দিনটি। এটি আমাদের একটি জাতীয় দিবস। এবং সরকারি ছুটির দিন।

উপসংহার : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িয়ে আছে এদেশের ছাত্র-যুবক, কৃষক-শ্রমিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সৈনিক, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, হিন্দু-মুসলিম, খ্রিষ্টান-বৌদ্ধসহ সব শ্রেণির মানুষের রক্তদানের স্মৃতি। রাজাকারদের বিভীষিকাময় হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমতার কথাও স্পষ্ট করে লেখা আছে ইতিহাসে। ৩০ লাখ শহিদের প্রাণ আর দুই লাখ মা-বােনের নির্যাতনের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কোনােক্রমেই ভুলে গেলে চলবে না বরং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশগঠনে ব্রতী হতে হবে প্রতিটি মানুষকে। দেশের সব শ্রেণির মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারলে তবেই আসবে স্বাধীনতা অর্জনের প্রকৃত সার্থকতা; সার্থক হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এবং এই স্বাধীনতা দিবসের মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌছে দিতে হবে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। এবং একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র গঠনে সবাইকে একজোট হতে হবে। তবেই সার্থক হবে শহীদের ত্যাগ।

About the Author:

I am Md Habibur Rahman Sohel. Like to read and write all kinds of bangla content. Mostly like bangla caption, status, poem, quotes and sms.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *